২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস

১১টি শীতের মজাদার পায়েস সম্পর্কে জানুনশীতের সময়ে ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসেবে পিঠা অন্যতম। বাহারি রকমের শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি ভোজন রসিকদের কাছে প্রাচীনকাল থেকেই তৃপ্তির এক রসনা। পিঠা বানানোর পাশাপাশি মজাদার পায়েস এর কথা একদমই বাদ যায় না।
২০টি-শীতের-পিঠার-সুস্বাদু-রেসিপি
পিঠাপুলির মৌসুমে পিঠা খাওয়ার জন্যে উপযুক্ত সময় হিসেবে শীতের সকালকে বেছে নিতে পারেন। শীতকালে খেজুরের রস দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের স্বাদের পিঠা যা সকলেরই কমবেশি পছন্দ।

পেইজ সূচিপত্র

২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি

শীতের সময়ে পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর আয়োজন বেশ জমে উঠে। কারণ বিভিন্ন রকমের পিঠার আয়োজন শীতকালে অনেক বেশি হয়ে থাকে। গরম গরম পিঠা শীতের আমেজে বেশ জমে উঠে। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েসগুলো জেনে নিয়ে আপনি মজাদার পিঠা এবং পায়েস ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন।
খেজুর রসের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করতে পারেন যার মধ্যে রয়েছে শাহি ভাপা পিঠা, রসের পিঠা, সিদ্ধ কুলি পিঠা, দুধপুলি, ক্ষিরে ভরা পাটিসাপটা, বিবি খানা পিঠা, মেরা পিঠা, তালের পিঠা, মুগ ডালের নকশা পিঠা, ডিমের ঝালপোয়া পিঠা, লাউয়ের পায়েস, গাজরের পায়েস, ফুলকপির পায়েস, খেজুরের রসে তৈরি ভাপা পিঠা ইত্যাদি।

শুধু তাই নয় রয়েছে লবঙ্গ লতিকা, দুধ খেজুরের রসে তৈরি ঝিনুক পিঠা, কাশ্মীরি ভাপা পিঠা, হৃদয় হরণ পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, দুধ পুলি পিঠা, মালপোয়া বা তেলের পিঠাসহ আরও অনেক ধরনের মজাদার শীতের পিঠার রেসিপি। বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু ২০টি শীতের পিঠার বিস্তারিত প্রক্রিয়া জেনে পিঠা তৈরি করতে হবে।

১. শাহি ভাপা পিঠাঃ
প্রথমে একটি পিঠার পাতিলে বাষ্প তৈরি করতে হবে। এরপর সেদ্ধ চাউলের গুঁড়া এবং পোলার চালের গুঁড়া নিয়ে নিতে হবে। এর সাথে স্বাদমত লবণ এবং পানি নিয়ে চালের গুঁড়াকে এমনভাবে মিক্স করতে হবে যেন কোন ধরনের দলা না হয়। বাঁশের চালনের ভিতরে চালের গুঁড়া রাখতে হবে। এর ভিতর কোড়ানো নারকেল মিক্স করে দিতে হবে।

অপর একটি বাটিতে চালের গুঁড়া নিয়ে এর সাথে নারকেল, গুড়, ঘি মাখিয়ে নিতে হবে। পেস্তাবাদাম, কিসমিস যুক্ত করতে হবে। এর সাথে চালের গুঁড়া মিক্স করে দিতে হবে। পাতলা কোন ভেজা কাপড় দিয়ে গরম পানি পিঠার হাড়ির মুখের মধ্যে বাটি উল্টে দিয়ে পিঠা তৈরি করতে হবে। পিঠার উপরে মালাই, পেস্তাবাদাম কুচি ছিটিয়ে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।

২. রস চিতই পিঠাঃ
রস চিতই পিঠা তৈরি করার জন্যে দুধ খুব ভালো করে ঘন করে জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে। এরপর হালকা গরম পানিতে পাতলা গুঁড়া করে নিতে হবে। এরপর মাটির খোলায় গোলা অল্প করে দিয়ে পিঠা তৈরি করতে হবে। যখন পিঠা ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন জ্বাল দেয়া সিরার রসে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

৩. খেজুর রসে ভাপা পিঠাঃ
সেদ্ধ এবং আতপ চালের গুঁড়ার সাথে লবণ এবং খেজুরের রস মিক্স করে মাখিয়ে নিতে হবে। এরপর একটু ঝরঝরে করে নিয়ে চালনি দিয়ে চেলে নিতে হবে। কোড়ানো নারকেল মিক্স করে দিতে হবে। একটি পাত্রে পানি ফুটে আসলে হালকা চেপে পিঠা তৈরি করতে হবে। খুব ভালোভাবে বাটি দিয়ে কাপড় মুড়িয়ে বসিয়ে দিতে হবে। এরপর কাপড়ের মাঝখানে একটু ফাঁকা করে বাটি উঠিয়ে দিয়ে পিঠা তৈরি করতে হবে। যখন পিঠা বানানো হয়ে যাবে তখন ঠান্ডা করে নিয়ে পাতলা রসে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

৪. নারকেলের তিল পুলি পিঠাঃ নারকেলের পুলি পিঠা তৈরি করতে ভাজা তিলের গুঁড়া, খেজুরের গুড়, চালের গোড়া, এলাচ গুঁড়া, দারুচিনি, চালের গুঁড়া ভাজার জন্যে তেল নিয়ে নিতে হবে। কোড়ানো নারকেল এবং গুড় দিয়ে মিক্স করে কিছু সময়ের জন্যে জ্বাল দিতে হবে। যখন সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশিয়ে শক্ত হয়ে আসবে তখন ভিতরে পুর দিয়ে দিতে হবে।

চালের গুঁড়া যখন সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন খামির তৈরি করে নিতে হবে এবং প্রতিটি খামির ছোট ছোট খণ্ড করে রুটির মতো করে ভিতরে পুর দিয়ে উল্টে দিতে হবে। এবার পুলি পিঠা কাটার চাকতি দিয়ে অথবা টিনের কোন ধরনের পাত দিয়ে ধীরে ধীরে কেটে নিতে পারেন। প্রতিটি পিঠার মুড়ি ভেঙে নকশা করে নিতে হবে। এরপর গরম তেলে মচমচ করে ভেজে নিতে হবে।

৫. ছানার পুলি পিঠাঃ ছানার পিঠা তৈরি করতে হলে কনডেন্সড মিল্ক, ময়দা, বেকিং পাউডার, চিনি, তেল পরিমাণ মতো নিয়ে নিতে হবে। কনডেন্সড মিল্ক, ময়দা, ছানা বেকিং পাউডার এবং ঘি একসাথে মিক্স করে নিয়ে ডো তৈরি করে নিতে হবে। এরপর ডো থেকে ছোট ছোট পুলি বানিয়ে গরম তেলে ভেজে সিরায় দিয়ে দিতে হবে। এর উপরে মাওয়া অথবা গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

৬. বিবিখানা পিঠাঃ
এই পিঠা তৈরি করতে চালের গুঁড়া, ঘি, দুধ, তিন থেকে চারটি ডিম, নারকেল, এলাচ, আদা, পানি পরিমাণমতো নিতে হবে। এর সাথে চালের গুঁড়া একটি পাতিলে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। খুব ভালোভাবে আলাদা একটি পাত্রে গুড় জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। এবার পিঠা তৈরি করার পালা। এর মধ্যে আপনি প্রথমে গুঁড়া দুধের সাথে ডিম ভালো করে মিক্স করে নিয়ে নারকেল দিয়ে দিতে হবে। খুব ভালো করে ব্রাশ করে খামির ঢেলে দিয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টার মতো বেক করে নিতে হবে।

৭. চুসি পিঠার পায়েসঃ
চুসি পিঠা তৈরি করতে হলে আপনাকে পরিমাণমতো পানি এবং লবণ একটি পাত্রে ফুটিয়ে নিতে হবে। এর সাথে চালের গুঁড়া দিয়ে মন্ড তৈরি করে নিতে হবে। যখনই অল্প করে মণ্ড তৈরি হবে এটি লতার মত করে বানিয়ে ছোট করে কেটে নিয়ে চুসি তৈরি করতে হবে। এরপর সসপ্যানে দুধ এবং গুড় খুব ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে চুসিগুলো দিয়ে দিতে হবে। যখনই এটি একটু ঘন হয়ে আসবে তখন ঠান্ডা করে পরিবেশন করতে হবে।

৮. চুঙ্গাপিঠাঃ
চুঙ্গাপিঠা তৈরি করা আপনার জন্যে একটু সহজ হতে পারে। যদি আপনার কাছে ঢলুবাঁশ থাকে তাহলে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন। ঢলুবাঁশে এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে যেটি আগুনে দেয়া মাত্রই বাঁশের চোঙ্গাকে সহজে পোড়ায় না। এর মাধ্যমে খুব সহজেই আগুনে পিঠা না পুড়িয়েই ভেতর থেকে পিঠা সেদ্ধ করা যায়। যখনই পিঠা তৈরি করবেন একরকম ভিন্ন স্বাদের পিঠা স্বাদ পাবেন।

এর জন্যে প্রয়োজন হবে চুঙ্গার ভেতরে পরিমাণমতো নারকেল, চালের গুঁড়া, বিন্নি চালের গুঁড়া, দুধ, চিনি মিক্স করে পিঠা তৈরি করতে হবে। চুঙ্গাপিঠা পোড়ানোর জন্যে প্রয়োজন হতে পারে খড়ের। কারণ যখন আপনি কলাপাতায় খুব ভালোভাবে মুড়িয়ে ঢলুবাঁশের ভেতর দিয়ে দিবেন, তখন খুব ভালোভাবে কলাপাতা এবং খড় দিয়ে শক্তভাবে বন্ধ করে দিতে হবে। এরপর ইট দিয়ে খুব ভালোভাবে একটু দুই পাশে উঁচু করে চাল ভর্তি বাঁশ বিছিয়ে দিতে হবে।

নিচে এবং উপরে খড় দিয়ে খুব ভালোভাবে আগুন দিয়ে পোড়াতে হবে। পোড়ানোর সময় খুব ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন ভেতরের চাল সেদ্ধ হয়ে আসতেছে। প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টার মত পোড়ানোর পর ভেতরের চাল সেদ্ধ হয়ে আসলে চোঙ্গার মুখ খুলে দিয়ে খাবারের জন্যে পরিবেশন করতে পারেন।

৯. পাতার পিঠাঃ
এই পিঠা তৈরি করার জন্যে প্রথমে চালের গুঁড়া খুব ভালোভাবে পানির সাথে মিক্স করতে হবে। এরপর এর মধ্যে হালকা আঁচে পাতার পিঠা দিয়ে কিছু সময় রাখতে হবে। এরপর যখনই খুব ভালোভাবে ভাপ দেওয়া হয়ে যাবে তখন রোদে শুকানোর জন্যে দিতে হবে। রোদে মচমচ করে শুকিয়ে আসলে ভাজতে পারবেন।

১০. পোস্তদানার পিঠাঃ
পিঠা তৈরি করতে প্রয়োজন হবে চালের গুঁড়া, লবণ, বেকিং পাউডার, পোস্তদানা ভাজার জন্যে পরিমাণমত তেল, গুঁড়া দুধ, চিনির গুঁড়া, লবণ এবং ডিম কিছু পরিমাণমত ময়দা নিয়ে খুব ভালোভাবে মিক্স করে লুচি করে নিতে হবে এবং ডোনাট কাটার পর পোস্ত দানা দিয়ে খুব ভালোভাবে ডুবো তেলে ভাজতে হবে। এরপর হয়ে গেলে উঠিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

১১. মুখশলা পিঠাঃ
এই পিঠা তৈরি করতে প্রথমে আপনাকে ক্ষীর তৈরি করতে হবে। এর জন্যে দুধের মধ্যে এলাচ, দারুচিনি এবং চিনি দিয়ে খুব ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে ক্ষীর তৈরি করে নিতে হবে। পরিমাণমতো চালের গুঁড়ো নিয়ে এর সাথে খুব ভালোভাবে মথে নিতে হবে। শক্ত হলে নামিয়ে ফেলতে হবে। অন্য একটি পাত্রে গুড় দিয়ে এর সাথে একটু পানি মিক্স করে সিরা তৈরি করে নিতে হবে।

কিছু সিরা আলাদা করে উঠিয়ে রাখতে হবে। আর বাকি সিরা দিয়ে চালের গুঁড়ো এবং লবণ মিশিয়ে দলা তৈরি করে নিতে হবে। যখন এটি একটু ঠান্ডা হবে এর সাথে ঘি এবং কলা মিক্স করে রাখতে হবে। মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত খুব ভালোভাবে মথার চেষ্টা করতে হবে। কিছু সময় পর একটু করে গুঁড়ির মিশ্রণ হাতের তালুতে নিয়ে গোল্লা বানাতে হবে।

খুব ভালোভাবে গোলাগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে চেপে চেপে খেলনা, বাটি, পাতিল এবং অন্যান্য যেকোন আকৃতি দিতে পারবেন। তবে এর ভিতরে ক্ষীর বড়ার জন্য খোল তৈরি করে নিতে হবে। তারপর খুব ভালো করে ক্ষীর ভরে নিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়ে তেল মাখিয়ে রাখতে হবে। যখন সবগুলোতে পুর ভরা হয়ে যাবে তখন খুব ভালোভাবে বাদামী রঙ করে ভেজে উঠিয়ে ফেলতে হবে।

১২. খাজুর পিঠাঃ
২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর মধ্যে এটি একটি। খাজুর পিঠা তৈরি করতে চালের গুঁড়া হালকা ভেজে নিয়ে এর খামির তৈরি করে নিতে হবে। খামির তৈরি হয়ে আসলে এর মধ্যে গুড়, নারকেল কুচি, কালোজিরার দানা এবং সামান্য লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে চটকে নিতে হবে। এরপর বেলুন পিড়ির মাধ্যমে মন্ড তৈরি করে লম্বা লম্বা করে বানিয়ে আড়াআড়ি কেটে নিতে হবে। কাটা টুকরোগুলো খুব হালকা করে তেল মাখিয়ে ভেজে নিতে পারেন। তিল মেখে ভাজলে পিঠার সৌন্দর্য খুব ভালোভাবে ফুটে উঠবে।

১৩. ফুলঝুরি পিঠাঃ
পিঠা তৈরি করতে চালের গুঁড়া, লবণ এবং চিনি গরম পানিতে প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টার মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ডিম ফেটিয়ে দিয়ে চালের গুঁড়ার সাথে খুব ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে। ফুলঝুরি নকশা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। সেটি কিনে নিয়ে এসে কিছু সময়ের জন্যে ডুবো তেলে রাখতে হবে।

এর মধ্যে আটার গোলার মধ্যে নকশাটি অর্ধেকেরও বেশি ডুবিয়ে দিতে হবে। এরপর খুব ভালোভাবে পাত্রে ডুবিয়ে রাখতে হবে। যখনই পিঠা খুব ভালোভাবে ফুলে উঠবে, তখনই ফুলঝুরি নকশা থেকে কাঠি দিয়ে আলাদা আলাদা করে বাদামী রং হয়ে আসলে তুলে নিতে হবে। ধীরে ধীরে এইভাবে সবগুলো পিঠা ভেজে নিতে হবে।

১৪. ছাঁচের পিঠাঃ
প্রথমে একটি পাত্রে গরম পানি ফুটিয়ে নিয়ে এর মধ্যে পাতলা কাপড় দিয়ে বেঁধে উপরে ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে। যখনই পানি খুব ভালোভাবে ফুটে উঠবে তখন কিছু সময়ের জন্যে রেখে দিতে হবে। পরবর্তী প্রস্তুতি হিসেবে আপনাকে চালের গুঁড়া এর সাথে খুব ভালোভাবে দুধ মিক্স করে নিতে হবে। অর্থাৎ চালের মন্ড তৈরি করে নিয়ে এক ধরনের খোল তৈরি করে নিতে হবে।

খোলের ভিতর পুর দিতে হবে কিন্তু পুর তৈরি করার জন্যে নারকেল গুড়, এলাচ, দারুচিনি খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে আঙ্গুলের ভাঁজে ভেতরে দিয়ে দিতে হবে। ভেতরে মোরা হয়ে আসলে গরম পাত্রের ঢাকনা তুলে ভাপ দেওয়ার জন্যে সবগুলো পিঠা ভেতরে দিয়ে দিতে হবে। যখনই ভাপে হয়ে আসবে তখন আপনি এটি পরিবেশনের জন্যে উঠাতে পারেন।

১৫. সবজি পুলি পিঠাঃ
সবজির পুলি পিঠা তৈরি করার জন্যে আপনাকে প্রথমে ময়দা, তেল এবং লবণ নিয়ে খুব ভালোভাবে একটি খামির তৈরি করে কিছু সময়ের জন্যে ঢেকে রাখতে হবে। এরপর গাজর, আলু, পেঁপে, বরবটি এবং আরও কিছু সবজি চাইলে কিউব করে কেটে নিতে পারেন। সবজিগুলো একটি পাত্রে আধা সেদ্ধ করে নিতে পারেন। এরপর চুলায় পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ দিয়ে হালকা ভেজে নিতে পারেন।

অন্যান্য মসলাগুলো দিয়ে এর মধ্যে সবজিগুলো দিয়ে নাড়াচাড়া করতে পারেন। এর মধ্যে অল্প করে ময়দা ছিটিয়ে দিতে পারেন। ছোট ছোট করে লুচি তৈরি করে ভেতরে পুর দিয়ে মুখ খুব ভালোভাবে বন্ধ করে ডুবো তেলে ভেজে নিতে পারেন। হয়ে আসলে পরিবেশনের জন্যে সবজি পুলি পিঠা তুলে ফেলতে পারেন।

১৬. শাহী গোলাপ পিঠাঃ
একটি পাত্রে পরিমাণমতো পানির সাথে চালের গুঁড়া এবং ময়দা সিদ্ধ করে নিতে পারেন। এরপর ঘি একটু হাতে নিয়ে খুব ভালো করে গোল গোল করে ছোট ছোট লুচির মত করে বেলে নিতে পারেন। যখন লুচিগুলো তৈরি হয়ে যাবে তখন আঙ্গুল দিয়ে ভালোভাবে চাপ দিয়ে ছুরি দিয়ে কয়েকটি দাগ কেটে নিতে পারেন যেন গোলাপের মতো দেখায়। এরপর গরম তেলে ভেজে নিয়ে পানিতে দিয়ে দিতে পারেন। চাইলে সিরা তৈরি করার সময় এর মধ্যে বাদামের গুঁড়া এবং কিসমিস দিয়ে দিতে পারেন। কিছুক্ষণ রেখে পরিবেশনের জন্যে তুলে ফেলতে পারেন।

১৭. ডিমের ঝাল পিঠাঃ
আতপ চালের গুঁড়ার সাথে ময়দা এবং লবন, সেই সাথে ডিম, সয়াবিন তেল, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ মিক্স করে নিতে পারেন। এর সাথে বেকিং পাউডার অল্প পরিমাণে নিয়ে একসাথে মিক্স করে নিতে হবে। এরপর পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা কুঁচকে নিয়ে ময়দার সাথে ডিম মিক্স করতে হবে। তেলে ভেজে নিয়ে যেকোন চাটনির সাথে ডিমের ঝাল পিঠা পরিবেশন করতে পারেন।

১৮. দোল্লা পিঠাঃ
পরিমাণমতো কোড়ানো নারকেল পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। এরপর খুব ভালোভাবে গুড় মিক্স করে দিয়ে চালের গুঁড়া শক্ত করে কাই তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সেই কাই থেকে দুই হাতের তালুতে অল্প করে নিয়ে পিঠা তৈরি করতে হবে। হয়ে আসলে বাঁশের চালনিতে রেখে অন্য আরেকটি পাত্রে পানি বলক নিয়ে এসে চালি উপরে রেখে বিশ থেকে ত্রিশ মিনিটের মতো জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। এরপর হয়ে আসলে পরিবেশন করুন।

১৯. কুশলী পিঠাঃ
ময়দার সাথে মাংসের কিমা মিক্স করে নিয়ে এর সাথে তেল নিয়ে লবণ এবং পানি পরিমাণমত দিতে হবে। একটি খামির তৈরি করে ছোট রুটির ভেতর কিমা দিয়ে পুটলি করে নিতে হবে। বাদামি রঙ হয়ে আসলে ভেজে নিতে হবে।

২০. গোকুলপিঠাঃ
এই পিঠা তৈরির জন্যে পরিমাণমতো গরুর দুধ, গম থেকে পাওয়া লাল আটা, চিনি পরিমাণমতো, ভাজার জন্যে প্রয়োজনীয় তেল এবং পানি নিয়ে নিতে হবে। প্রথমে খুব ভালোভাবে দুধ জ্বাল করে নিয়ে ক্ষিরসা তৈরি করতে হবে। তারপর সেই ক্ষিরসার সাথে ছোট ছোট করে চ্যাপ্টা করে বড়া বানিয়ে নিতে হবে। পূর্বেই সিরা তৈরি করে রাখতে হবে। খুব ভালোভাবে আটা গুলিয়ে ক্ষীরসার বড়া তৈরি করে ভেজে নিতে হবে। ভাজা পিঠা গরম গরম পরিবেশন করতে পারেন।

শীতের মজাদার পায়েস কিভাবে তৈরি করবেন

শীতের সময়ে মজাদার পায়েসের স্বাদ নেওয়ার জন্যে সঠিকভাবে পায়েস তৈরি করতে হবে। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর জন্যে আপনার প্রয়োজন হতে পারে আতপ চাউলের গুঁড়ো অথবা পোলাওর চাউল। চাউলের গুঁড়ো এর সাথে চিনি, দুধ, তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, পেস্তাবাদাম এবং কিসমিস দিয়ে জ্বাল করে নিতে হবে। মাঝে মাঝে চেক করে দেখতে হবে চাল খুব ভালোভাবে সেদ্ধ হয়েছে কিনা।
শীতের-পিঠার-লোভনীয়-মালাই-গুড়ের-ভাপা-পিঠা
চাল যখনই সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন চিনি দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে। একটু ঘন হয়ে আসলে কিসমিস এবং পেস্তাবাদাম ছিটিয়ে পরিবেশন করতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস তৈরি করতে চান তাহলে প্রায় পঞ্চাশ গ্রামের মতো চাল নিয়ে নিতে হবে। এর সাথে দুইশো গ্রাম খেজুরের গুড়, দুধ এক কেজির সাথে তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, বাদাম এবং কিসমিস রাখতে হবে।

প্রথমে একটি বাটিতে চাল ধুয়ে নিয়ে রেখে দিতে হবে। এরপর খুব ভালোভাবে ঘন করে দুধ জ্বাল দিতে হবে। খেজুরের গুড় ছোট করে দুধের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। এর মধ্যে চাল হালকা আঁচে জ্বাল দিতে হবে এবং এর সাথে তেজপাতা, দারুচিনি এবং এলাচ দিয়ে দিতে হবে। মাঝে মাঝে নেড়ে দেখতে হবে চাল কতোটুকু সেদ্ধ হয়েছে।

দুধ একটু জ্বাল করা হয়ে আসলে সেদ্ধ চাল এবং খেজুরের গুড় দুধ দিয়ে মিক্স দুটি একসাথে করে নাড়তে হবে। ঘন হয়ে আসলে পায়েসের উপরে পেস্তাবাদাম ছিটিয়ে পরিবেশন করতে হবে। এইভাবে আপনি শীতের মজাদার পায়েস ঘরে থাকা উপাদান দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারবেন।

শীতের পিঠার লোভনীয় মালাই গুড়ের ভাপা পিঠা

শীতের পিঠার সবচেয়ে লোভনীয় মালাই গুড়ের ভাপা পিঠা কখনো খেয়ে দেখেছেন কি? হয়তো শুধু ভাবছেন কিভাবে সুস্বাদু মালাই গুড়ের ভাপা পিঠা তৈরি করবেন। চিন্তার কোন কারণ নেই মালাই গুড়ের ভাপা পিঠা তৈরির সহজ উপায় সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রথমে আপনাকে প্রায় দুই থেকে তিন কেজি চালের গুঁড়ো নিয়ে নিতে হবে।
  • চালের গুঁড়া নেওয়ার পর এর সাথে লবণ গুড়ের কুচি এবং কোড়ানো নারকেল নিতে হবে।
  • পরিমাণমতো মালাই নিয়ে সবগুলো একসাথে মিক্স করে নিতে হবে।
  • যখনই মিক্স করবেন খেয়াল রাখতে হবে এটি ঝুরঝুর হয়েছে কিনা।
  • এরপর চালনি দিয়ে খুব ভালোভাবে মিশ্রণ গুলিকে চেলে নিতে হবে।
  • ভাপা পিঠা তৈরি করার জন্যে খেয়াল রাখতে হবে গরম পানির হাড়ি চুলার উপরে বসানো রয়েছে কিনা।
  • চালের গুড়ার বাটি অর্ধেক এর মতো পরিমাণ নিয়ে মালাই গুড়ের কুচি এবং নারিকেল কোড়ানো মিক্স করতে হবে।
  • এই অবস্থায় চালের গুঁড়ো একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ভিজিয়ে চুলার মধ্যে গরম পানির পাত্রের উপরে রাখতে হবে।
  • চার থেকে পাঁচ মিনিটের জন্যে রেখে দিয়ে বাটি নামিয়ে ফেলতে হবে।
  • কিছু সময় রেখে দিলে মালাই গুড়ের ভাপা পিঠা নিমিষেই তৈরি হয়ে যাবে।
  • তৈরি হয়ে যাওয়ার পর আপনি গরম গরম পরিবেশনের জন্যে উঠিয়ে নিতে পারেন।

শীতে সুস্বাদু মজাদার সেমাই পিঠা তৈরির পদ্ধতি

সুস্বাদু মজাদার সেমাই পিঠা তৈরি করা খুবই সহজ। প্রথমে সাময়িক পিঠা তৈরি করার জন্যে চালের গুঁড়া, লিকুইড দুধ, কন্ডেসড মিল্ক, চিনি, খেজুরের গুড়, এলাচ গুঁড়া, লবণ, পানি, কিসমিস, পেস্তাবাদাম উপকরণগুলো সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যখনই উপকরণগুলো আপনার সংগ্রহে থাকবে তখন তৈরি করার জন্যে চালের গুঁড়ার ডো কিছুটা সময় পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে।

এরপর সেই কাই একটু ঠান্ডা করে নিয়ে মথে নিতে হবে। যখনই মথা হয়ে যাবে তখন ছোট ছোট করে ডো তৈরি করে নিয়ে সেমাই বানিয়ে নিতে হবে। যখন সেমাই বানানো হয়ে যাবে তখন দুধের পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। যখনই দুধ ফুটে আসবে তখন উঠিয়ে এটিকে ঠান্ডা করে এর মধ্যে গুড় গুলিয়ে নিতে হবে। এবার আপনাকে দুধের সাথে খুব ভালোভাবে এলাচের গুঁড়া, স্বাদমতো চিনি এবং কনন্ডেসড মিল্ক একসাথে মিক্স করে নিয়ে জ্বাল করতে হবে।

যখনই শুকিয়ে যাবে তখন তৈরি করে রাখা সেমাইগুলোকে এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। যখন একটু ঘন হয়ে আসবে তখন নামিয়ে নিতে হবে। হালকা গরম হলেই গুড় এবং দুধের মিশ্রণ মিক্স করে নিতে হবে। যখন ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন কিসমিস এবং পেস্তাবাদাম কুচি ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করতে হবে। এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু মজাদার সেমাই পিঠা যা একবার খেলে বারবার খেতে মন চাইবে।

শীতে মজাদার কলা পিঠার রেসিপি

শীতে মজাদার কলা পিঠার রেসিপি হয়তো অনেকের অজানা থাকতে পারে। কলা পিঠার রেসিপি এতটাই সুস্বাদু হয় যে না খেলে বুঝতে পারবেন না। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর মধ্যে এটি একটি। এই পিঠা তৈরি করতে হলে উপকরণ হিসেবে আপনার নিয়ে নিতে হবে পরিমাণমতো ময়দা, তিন থেকে চারটি ডিম, পরিমাণমতো দুধ, সেই সাথে পাকা কলা, চিনি এবং ঘি। প্রথমে আপনাকে পাকা কলা লম্বা লম্বা করে কেটে নিতে হবে।
শীতে-মজাদার-কলা-পিঠার-রেসিপি
এরপর আপনি একটি পাত্রে দুধ এর সাথে খুব ভালোভাবে ময়দা এবং ডিম মিক্স করে নিতে হবে। যখন এইটুকু শেষ হবে এরপর একটি পাত্রে ঘি নিয়ে কেটে রাখা কলার পিসগুলো ময়দার গোলায় খুব ভালো করে চুবিয়ে ভেজে নিতে হবে। ডুবো তেলে যখন ভাজা হয়ে যাবে তখন চিনির রসে খুব ভালোভাবে ডুবিয়ে রাখতে পারেন। যখনই ডুবানো হয়ে যাবে কিছু সময় পর মজাদার সুস্বাদু কলা পিঠা পরিবেশন এর জন্যে সাজিয়ে নিতে পারেন।

জনপ্রিয় শীতের পিঠা কোনগুলো

জনপ্রিয় শীতের পিঠা সম্পর্কে কোন ধরনের ধারণা না থাকলে কি করে নিজেই পিঠা বানিয়ে খাবেন। যেহেতু শীতের সময়ে পিঠার উৎসব খুব জমে উঠে। তাই এই সময়ে যদি পিঠা বানানোর প্রক্রিয়াগুলো আপনার জানা থাকে এবং জনপ্রিয় পিঠা সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে খুব সহজেই বাহারি রকমের পিঠা তৈরি করে এর স্বাদ নিতে পারবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয় কিছু শীতের পিঠা সম্পর্কে যা খেলে মন ভরে যায়।

  • ভাপা পিঠা যা আপনি চালের গুঁড়া, গুড়, নারিকেলের শাঁস দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করে নিতে পারবেন।
  • এর জন্যেই আপনাকে এই পিঠা আপনাকে ভাপে তৈরি করে নিতে হবে।
  • চিতই পিঠার নাম নিশ্চয়ই খুব শুনেছেন। এটি তৈরি করার জন্যে খুব ভালোভাবে চাউল পানিতে গুলিয়ে নিয়ে চিতই তাওয়ায় বানিয়ে নিতে হবে।
  • বানানো হয়ে আসলে এই পিঠা ভর্তা কিংবা মাংস যেকোন কিছু দিয়েই আপনি খেতে পারেন।
  • পাটিসাপটা পিঠা এর জন্যে সুজি, ময়দা, চালের গুঁড়া, কোড়ানো নারকেল, মাওয়া, ঘি, তেল, লবণ, চিনি এবং দুধ এই উপকরণগুলো দিয়ে তৈরি করতে পারবেন।
  • পুলি পিঠা ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর মধ্যে অত্যন্ত সুস্বাদু একটি মজাদার পিঠা যা সবার কাছেই কমবেশি জনপ্রিয়। এই পিঠা মূলত চাল দিয়েই তৈরি করতে হয়।
  • এছাড়াও আপনার পছন্দের বেশ কিছু উপকরণ দিয়ে পুলি পিঠা সুস্বাদু করে তৈরি করে নিতে পারেন।
  • এছাড়াও বিভিন্ন রকমের পুলি পিঠা তৈরি করা যায়। যার মধ্যে রয়েছে দুধপুলি, ভাপাপুলি, ক্ষীরপুলি, নারকেল পুলি, ঝাল পুলি ইত্যাদি।
  • মালপোয়া অথবা তেলের পিঠার নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন যা খেজুরের রসের সাথে চালের গুঁড়া মিক্স করে লবণ এবং তেল মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
  • সেই সাথে নোয়াখালীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খোয়াজা পিঠা যা চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। এই পিঠা মাংস দিয়ে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে।
  • বিশেষ করে অনেক সময় হাঁসের মাংস দিয়েই এই পিঠা বেশি খাওয়া হয়।

মজাদার সাগুদানা পিঠার রেসিপি

মজাদার সাগুদানা পিঠা খেতে কতই না সুস্বাদু। যখনই শীত পড়ে যায় তখনই ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। আর সেই মুহূর্তে যদি মজাদার সাগুদানার পিঠার রেসিপি তৈরি করে নিতে পারেন, তাহলে মজাদার সুস্বাদু পিঠার অনুভূতি বাড়িতে বসেই পেতে পারেন। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস তৈরিতে সাবুদানা দেড় কাপের মতো, সাথে ময়দা, লবণ, পানি এবং তেল নিয়ে নিতে হবে।

প্রথমে পরিমাণমতো পানি পাত্রে নিয়ে এর মধ্যে লবণ এবং চিনি মিক্স করে হালকা তাপে চুলায় দিয়ে রাখতে পারেন। যখন পানি ফুটে আসবে তখন এর মধ্যে সাবুদানা এবং ময়দা একসাথে মিক্স করে নিয়ে খামির তৈরি করে নিতে হবে। খুব ভালোভাবে রুটি বেলে নিয়ে নকশা কেটে নিয়ে কড়াইতে ডুবো তেলে ভাজতে হবে। ভাজার পরে সাবুদানার পিঠা একটি পাত্রে তুলে নিতে হবে। এরপর গরম গরম সাবুদানার পিঠা পরিবেশন এর জন্য সাজাতে পারেন।

দুধ চিতই পিঠা তৈরির সহজ প্রক্রিয়া

দুধ চিতই পিঠা বাংলার ঘরে ঘরে এক অন্যরকম স্বাদ। খেজুরের রসের সাথে অথবা খেজুরের গুড় মিক্স করে এই পিঠা তৈরি করতে পারলে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর দুধ চিতই পিঠা তৈরীর সহজ প্রক্রিয়া পূর্ব থেকেই কিছুটা ধারণা থাকতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অতি সহজে দুধ চিতই পিঠা তৈরি করতে পারবেন।

  • প্রথমে আপনাকে উপকরণ হিসেবে চালের গুঁড়া নিয়ে নিতে হবে।
  • এর জন্যে আপনি আতপ চাউলের গুঁড়া এর সাথে পরিমাণমতো পানি এবং লবণ মিক্স করে নিতে পারেন।
  • এরপর তরল দুধ, খেজুরের গুড়, কোড়ানো নারকেল, এলাচি, দারুচিনির টুকরো এবং পরিমাণমতো লবণ নিতে পারেন।
  • চালের গুঁড়ো হালকা গরম পানি এবং লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে গোলা তৈরি করে নিতে পারেন।
  • এরপর চিতই পিঠার যেই খোলা রয়েছে সেই খোলায় ভেজা কাপড় দিয়ে খুব ভালোভাবে মুছে নিতে হবে।
  • খোলায় দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই হালকা গরম করে সামান্য তেল ব্রাশ দিয়ে মুছে দিতে হবে।
  • গরম খোলায় গোলা দিয়ে ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে।
  • ঢাকনা দেওয়ার পর পিঠা হয়ে আসলে খুন্তি দিয়ে খুব ভালোভাবে পিঠাটি উঠিয়ে নিতে হবে।
  • যখন এইভাবে আপনি সবগুলো পিঠা খুব ভালোভাবে তৈরি করে ফেলবেন তখন একটি পাত্রে দুধ গরম করে নিতে হবে।
  • এরপর এলাচি এবং দারুচিনি, গুড় খুব ভালোভাবে দুধে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • হালকা আঁচে দুধ চুলায় গরম করে নিয়ে পিঠাগুলো দিয়ে দিতে হবে।
  • কোড়ানো নারকেল এর উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন যার ফলে খুব ভালো একটি স্বাদ পাবেন।
  • তিন থেকে চার ঘণ্টা পর যখন পিঠা ভিজে একটু নরম হয়ে আসবে, তখন উপরে আরও কিছু কোড়ানো নারকেল ছড়িয়ে দিতে পারেন।
  • এরপর গরম গরম পরিবেশন এর জন্যে মজাদার দুধ চিতই পাত্রে সাজিয়ে নিতে পারেন।

মুচমুচে নকশি পিঠার রেসিপি

মুচমুচে নকশি পিঠা সবারই খুব পছন্দের হয়ে থাকে। কারন এই পিঠা দেখতে যেমন সুন্দর হয় ঠিক তেমনি খেতেও অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে। শীতের সময়ে মুচমুচে নকশি পিঠা খেতে পারবেন না তা কি করে হয়? তাই বাড়িতে সামান্য কিছু উপকরণ দিয়েই এই মুচমুচে নকশি পিঠার রেসিপি তৈরি করা যায়। উপকরণ হিসেবে প্রয়োজন হবে চালের গুঁড়ো, পানি, তেল, লবণ, ঘি, খেজুরের গুড়, চিনি, পানি এবং পারফেক্ট গুড়ের সিরা।
২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস এর সকল উপাদানগুলো আপনার হাতের কাছে থাকলে আপনি খুব সহজেই পিঠা তৈরি করতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে পানির সঙ্গে লবণ এবং ঘি মিক্স করে নিয়ে এতে চালের গুঁড়া মিশিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেদ্ধ হওয়ার পর পিঠা তৈরি করার জন্যে ঠান্ডা করে নিতে হবে। খুব ভালোভাবে মথে নিয়ে রুটির মত বানিয়ে নিতে হবে।

এরপর খেজুর কাটা দিয়ে রুটিতে খুব ভালোভাবে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন নকশা করতে পারেন। সেই নকশা করার পর আপনি এই পিঠাকে খুব ভালোভাবে ডুবো তেলে ভেজে নিতে পারেন। এরপর থেকে উঠিয়ে নিয়ে পিঠাকে সরাসরি সিরায় দুই থেকে তিন মিনিটের জন্যে রেখে দিতে পারেন। এরপর কিছু সময়ের মধ্যে পিঠাটি তুলে আপনি বেশ কয়েকদিন সংরক্ষণ করে খেতে পারবেন। 

শেষকথা

প্রিয় পাঠক, প্রচলিত গ্রাম বাংলার শীতের সময়কার পিঠা খুবই জনপ্রিয়। শুধু গ্রামেই নয় এখন শহরেও বিভিন্ন রকমের জনপ্রিয় পিঠা তৈরি করা হয়ে থাকে। ২০টি শীতের পিঠার সুস্বাদু রেসিপি এবং মজাদার পায়েস সম্পর্কে জেনে নিশ্চয়ই এখন আপনিও শীতের সময় পিঠাপুলির আয়োজন ঘরে বসেই করতে পারবেন। যদি আপনার কাছে বিস্তারিত ভালো লাগে তাহলে আপনার আশেপাশে পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। সেই সাথে আমাদের ওয়েবসাইটকে ফলো করে রাখতে পারেন যাতে পরবর্তী আর্টিকেল এর নোটিফিকেশন খুব সহজেই আপনি পেতে পারেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url