১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে

হরেক রকমের সুস্বাদু শীতের পিঠার প্রক্রিয়ারাজকীয় স্বাদে শীতের মজাদার পায়েসের ধুম যদি ঘরে বসেই করা যায় তাহলে কতই না আনন্দ হতে পারে। আর সেই ঐতিহ্যবাহী শীতের পায়েসের আনন্দ পেতে হলে এই মজাদার পায়েস রান্নার প্রক্রিয়া জানতে হবে।
বিভিন্ন-রকমের-পায়েস-বানানোর-সঠিক-রেসিপি
বাঙালির শীতের আমেজের সময় যেকোন ধরনের অনুষ্ঠান ছাড়াই এই ফিরনি পায়েসের আয়োজন বাংলার প্রতিটি ঘরে করা হয় যার স্বাদ অতুলনীয় এবং খুবই আকর্ষণীয়।

পেইজ সূচিপত্র

১১টি শীতের মজাদার পায়েস কিভাবে বানাবেন

শীতের মজাদার পায়েস তৈরি করা খুবই সহজ। কারণ এই সময়ে যেই ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান বাজারে পাওয়া যায় তা দিয়ে বিভিন্ন রকমের পায়েস তৈরি করা যায়। কিন্তু এই পায়েস বানানোর প্রক্রিয়া যদি আপনার মাথায় না থাকে তাহলে কিভাবে তৈরি করবেন। শীতের সময়ে এইরকম কিছু মজাদার পায়েসের নাম এর মধ্যে গুড়ের পায়েস, খেজুর রসের পায়েস ইত্যাদি রয়েছে।
এছাড়াও গাজরের পায়েস, ফুলকপির পায়েস, নারিকেলের পায়েস, বাদামের পায়েস, পোলাও চাল এবং বিন্নি চালের পায়েস, লাউ দুধের পায়েস এবং গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে ভিন্ন রকমের সুস্বাদু মজাদার পায়েস তৈরি করা যায়। তবে এই ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে তৈরি করার জন্যে চিনি, দুধ, কিসমিস, এলাচ, বাতাসা, ঘি, কাজুবাদাম, তেজপাতা, প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ এবং পরিমাণমতো গোবিন্দভোগ বা বিন্নি চাল প্রয়োজন হতে পারে।

অথবা আপনার কাছে যদি উপকরণগুলো থাকে তাহলে কুড়ানো নারকেল, দুধ, চিনি, কিসমিস, বাতাসা মিক্স করে দিয়ে পায়েস তৈরি করতে পারেন। এর সাথে যদি খেজুরের গুড় অথবা রস মিক্স করে দিতে পারেন তাহলে পায়েসের স্বাদ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। পায়েস রান্না হয়ে গেলে এর মধ্যে আপনি কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম অথবা কাঠবাদাম কুচি করে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

১১টি শীতের মজাদার পায়েস তৈরির সহজ প্রক্রিয়া

শীতের মজাদার পায়েস তৈরির প্রক্রিয়া সহজভাবে তৈরি করা জেনে নিলে আপনি ঘরে বসেই খুব সহজে সেই পায়েস তৈরি করতে পারবেন। এর জন্যে প্রয়োজন সঠিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শীতের পিঠা তৈরি করা আপনার কাছে কোনভাবেই কঠিন মনে হবে না। ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে জেনে নিলে ভিন্ন স্বাদের পায়েস তৈরি করতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে আসা যাক ১১টি শীতের মজাদার ভিন্ন স্বাদের পায়েস কিভাবে সহজে তৈরি করা যায়।
 
১। গাজরের পায়েসঃ গাজরের পায়েস তৈরি করতে হলে আপনাকে খুব ভালোভাবে গাজর এবং কাজুবাদাম সেদ্ধ করে নিতে হবে। যখনই কাজুবাদাম এবং গাজর সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন এইগুলো খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। পেস্টকে একদমই পাতলা করা যাবে না। খুব ভালোভাবে প্যানে ঘি মিক্স করে নিয়ে কাঠবাদাম কুচি করে কেটে নাড়তে হবে।

এর সাথে কিসমিস এবং নারিকেল কুচি দিয়ে দিতে পারেন। কিছু সময়ের মধ্যে বলক আনা দুধ দিয়ে দিতে পারেন। একটু পরপর এইগুলো নাড়তে থাকুন। যখনই পায়েস ঘন হয়ে আসবে তখন কিসমিস এবং বাদাম কুচি ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

২। আতপ চালের পায়েসঃ এই পায়েস তৈরি করতে হলে আপনাকে আতপ চাল এক কাপ পরিমাণ নিতে হবে। এর মধ্যে দুধ এক লিটার, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম বাটা এক কাপ নিয়ে নিতে হবে। চিনি, মাওয়া, দারুচিনি, এলাচ, বাদাম এবং কিসমিসের সাথে চেরি ফল উপকরণ হিসেবে রাখতে হবে। প্রথমে খুব ভালোভাবে আতপ চাল ধুয়ে নিয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

এরপর পাত্রে দুধ জ্বাল করে নিতে হবে। দুধ যখন ফুটে উঠবে তখন এর মধ্যে চিনি এবং চাউল খুব ভালোভাবে দিয়ে মিক্স করে নিতে হবে। কিছু সময় পর সব উপকরণ দিয়ে মিক্স করতে হবে। চাল যখন খুব ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে যাবে তখন পরিবেশনের পূর্বে বাদাম কিসমিস এবং চেরি ফল কুচি করে কেটে উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

৩। খেজুর রসের পায়েসঃ রস দিয়ে পায়েস তৈরি করার সময় অবশ্যই এর সাথে পোলাও চালের গুঁড়ো এবং দুধ মিক্স করে নিতে হবে। এতে করে যখন আপনি পাত্রে ঘি নিয়ে এই উপকরণগুলোকে জ্বাল দিবেন তখন খেজুরের রসের খুব ভালো একটি সুস্বাদু ঘ্রান বের হবে। সেই সাথে খেজুরের গুড় মিক্স করতে পারেন। পরিবেশনের সময় সময় বাদাম কুচি করে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

৪। গুড়ের পায়েসঃ এই পায়েসের জন্যে ভেজানো পোলাওয়ের চাল আধা কাপের মতো নিয়ে নিতে হবে। খুব ভালোভাবে গুড়ের সাথে পানি মিক্স করে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর পোলাওয়ের চাল পানিতে দিয়ে তেজপাতা, এলাচ এবং লবণ হালকা তাপে সেদ্ধ করতে হবে। যখনই চাল সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন নারিকেল এবং ঘন দুধ করে খুব ভালোভাবে নাড়তে হবে। অল্প সময় চাল দিয়ে ঘন হলেই নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর বাদাম কিসমিস দিয়ে উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

৫। ফুলকপির পায়েসঃ ফুলকপির পায়েসের জন্যে প্রথমে গোবিন্দভোগ চাল সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর ফুলকপি খুব ভালো করে ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে চালের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। গুড়, দুধ, এলাচ গুঁড়া, দারুচিনি মিক্স করে নিয়ে একটু পরপর নাড়তে হবে। যখনই কিছুটা ঘন হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে কনডেন্সড মিল্ক এবং মাওয়া দিয়ে দিতে হবে। তবে একটু পরপর দিতে হবে যেন জমাট না বাঁধে। যখনই পায়েস হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে কিসমিস, পেস্তা বাদাম কুচি করে ছিটিয়ে দিবেন।

৬। চুসি পিঠার পায়েসঃ এই পিঠা তৈরি করার জন্যে আপনাকে চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় এবং পরিমাণমতো লবণ নিয়ে নিতে হবে। প্রথমে একটি পাত্রে পানি এবং লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে চালের গুঁড়ার একটি মন্ড তৈরি করতে হবে। মন্ড তৈরি হয়ে যাওয়ার পর এটিকে খুব ভালোভাবে রুটি বেলার পিড়িতে ছোট ছোট মন্ড তৈরি করে নিয়ে লতার মত বানিয়ে নিতে হবে।

যখনই লতা তৈরি হয়ে যাবে তখন ছোট করে এটাকে কেটে চুসি তৈরি করতে হবে। পরবর্তীতে দুধ এবং গুড় খুব ভালোভাবে জাল দিয়ে কেটে রাখা চুসিগুলো ফুটাতে হবে। হয়ে আসলে ঠান্ডা করে নিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

৭। বিন্নি চালের পায়েসঃ বিন্নি চালের পায়েস তৈরি করতে হলে প্রথমে পরিমাণমতো দুধ অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। যখনই দুধ জ্বাল হবে তখন এর মধ্যে চিনি, এলাচ এবং দারুচিনি, তেজপাতা দিয়ে দিতে পারেন। অল্প আঁচে একটু পরপর নাড়াচাড়া করে এর মধ্যে বিন্নি চাল পরিমাণমতো দিয়ে দিতে পারেন। সেদ্ধ হয়ে আসলে তখন অন্য একটি পাত্রে সামান্য ঘি দিয়ে দিতে হবে।

এর মধ্যে কুড়ানো নারিকেল ভেজে নিতে হবে। কুড়ানো ভাজা নারিকেল খুব ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে খেজুরের গুড় ছিটিয়ে দিতে হবে। যখনই পায়েস তৈরি হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম এবং কাঠবাদাম কুচি করে কেটে পরিবেশন করতে পারেন।

৮। নারিকেলের পায়েসঃ ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে তৈরি এর মধ্যে নারিকেলের পায়েস তৈরি করতে হলে পরিমাণমতো পোলাওয়ের চাল এবং দুধ একটি বড় পাত্রে নিয়ে জ্বাল দিতে হবে। জ্বাল হয়ে আসলে এর মধ্যে কুড়ানো নারিকেল খুব ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। যদি আপনি খুব বেশী নারকেল দিতে চান তাহলে নারকেলের পেস্ট করে নিয়ে নারকেলের পায়েস তৈরি করতে পারেন।

৯। গোবিন্দভোগ চালের পায়েসঃ এই চালের পায়েস তৈরি করতে হলে প্রথমেই আপনাকে পরিমাণমতো দুধ একটি পাত্রে খুব ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। এর মধ্যে হালকা আঁচে তেজপাতা এবং এলাচ মিক্স করে নিতে হবে। এরপর ঘন দুধের মধ্যে চাল দিয়ে নাড়াচাড়া করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। যখন দুধটা একটু ঘন হয়ে পায়েসের মতো হয়ে আসবে ঠিক তখনই নামিয়ে ফেলতে হবে।

১০। পোলাও চালের পায়েসঃ পোলাও চালের পায়েস তৈরি করার পূর্বে অবশ্যই খুব ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। চাল যখন একটু ঝরঝরে হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে ঘি মিক্স করতে হবে। যদি বাড়িতে নলেন গুড় থাকে তাহলে দুধের মধ্যে খুব ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি এবং কিসমিস দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। এই অবস্থায় যখন চাল সেদ্ধ হয়ে যাবে তখন খুব ভালোভাবে নেড়ে নিতে হবে। পরিবেশনের পূর্বে বাদাম কুচি এবং নারকেল কুচি মিক্স করে নিতে পারেন।

১১। লাউ দুধের পায়েসঃ লাউ দুধের পায়েস তৈরি করতে হলে প্রথমত আপনার তরল দুধ প্রয়োজন হবে। এরপর কচি লাউ, কিসমিস, দারুচিনি, এলাচ, লবণ, চিনি উপকরণ হিসেবে রাখতে হবে। একটি লাউ নিয়ে এর মাঝখানে বিচি ফেলে দিয়ে পুরোটা খুব ভালোভাবে কেটে নিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর পাতিলে রান্না করা দুধের সাথে দারুচিনি, এলাচ, লবণ এবং চিনি মিক্স করে দুধ ঘন রেখে বাদাম এবং কিসমিস দিয়ে নাড়তে হবে। যখনই মিশ্রণটি খুব ভালোভাবে ঘন হয়ে আসবে তখন এর উপরে কিসমিস এবং বাদাম ছিটিয়ে দিতে পারেন।

রাজকীয় স্বাদে শীতের পায়েস

রাজকীয় স্বাদে শীতের পায়েস তৈরি করার জন্যে আপনাকে একটি বড় ফুলকপি নিতে হবে। এর মধ্যে দুধ প্রায় দুই লিটারের মতো রাখতে হবে। এর সাথে গোবিন্দভোগ চাল যুক্ত করতে পারেন। যখন গোবিন্দভোগ চাল এক থেকে প্রায় দুই কাপের মতো নিয়ে নিবেন তখন এর মধ্যে খেজুরের গুড় নিতে পারেন। প্রায় দুই থেকে তিন কাপের মতো সাথে কনডেন্সড মিল্ক প্রায় একটিন এর মতো নিতে পারেন।

মিল্কের সাথে উপকরণ হিসেবে ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে তৈরি করতে পারেন। এলাচ, দারুচিনি গুঁড়া এবং মাওয়া দুই থেকে তিন কাপের মতো নিতে পারেন। এর সাথে পরিবেশনের জন্যে রাখতে পারেন পেস্তাবাদাম, কিসমিস। বাদাম দেওয়ার পূর্বে খুব ভালোভাবে কুচি করে দুই টেবিল চামচের মত নিতে পারেন। রাজকীয় স্বাদে মজাদার সুস্বাদুু পায়েস তৈরি করার জন্যে এই উপকরণগুলো রাখতে হবে।
চুসি-পিঠার-পায়েস-তৈরির-সহজ-উপায়
এরপর যখন আপনার উপকরণগুলো সংগ্রহ হয়ে যাবে। তখন আপনি প্রায় এক থেকে দুই লিটার দুধের মধ্যে গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে খুব ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিতে পারেন। ফুলকপি শুরু থেকেই ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। আপনি চাইলে এটি বাঁধাকপি দিয়েও করতে পারেন। এর মধ্যে এক লিটার দুধ দিয়ে আলাদা করে সেদ্ধ করে নিতে হবে। রেখে দেওয়া সেদ্ধ করা চালের সাথে গুড় মিক্স করে দিতে হবে।

এরপর যেইটুকু দুধ বাকি রয়েছে সেখানে এলাচ গুঁড়া করে নেড়ে দিবেন। যখনই এটি ঘন হয়ে আসবে তখন কনডেন্সড মিল্ক এবং মাওয়া দিয়ে নেড়ে দিবেন তখন অল্প আঁচে জ্বাল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যেন জমাট না বাঁধে। আপনি চাইলে এর সাথে নারকেল মিক্স করে দিতে পারেন। যখনই পায়েস তৈরি হয়ে আসবে তখন এর উপরে কিসমিস, পেস্তাবাদাম, আমন্ড কুচি করে সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

খুব সহজে ঘরোয়াভাবে শীতের পায়েস

ঘরোয়াভাবে সহজে শীতের পায়েস তৈরি করা আপনার হাতের নাগালের মধ্যে কারণ বাড়িতে থাকা পোলাও এর চাল দিয়ে শীতের পায়েস তৈরি করতে পারেন। তবে এর মধ্যে খেজুরের রস এর পরিমাণ এক লিটার এর মত রাখতে পারেন। লবণ দিতে পারেন প্রায় সামান্য এবং এলাচ, তেজপাতা, দারুচিনি, কুড়ানো নারিকেল পরিমাণ মতো দিয়ে দিতে পারেন।

তবে ঘরে থাকা পোলাও এর চাল ব্যবহারের পূর্বে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। যখন খুব ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে তখন পানি ঝরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যদি প্রয়োজন হয় পাটায় সামান্য পরিমাণে গুঁড়া করে নিতে পারেন। এই কাজটি আপনি ব্লেন্ডার দিয়েও করতে পারেন। এখন আপনি খেজুরের রস একটি পাত্রে নিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে পারেন।

চুলায় বসানো হয়ে গেলে যখন বলক চলে আসবে তখন এর মধ্যে চাউল এবং বাকি যেই সকল উপকরণগুলো রয়েছে সবগুলো একসাথে মিক্স করে নিতে পারেন যখনই চাল সেদ্ধ হয়ে আসবে তখন সুস্বাদু মজাদার ঘরোয়া শীতের পায়েস তৈরি হয়ে যাবে। এরপর যখন ঠান্ডা হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে বাদাম এবং কিসমিস কুচি করে পায়েসের উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

বিভিন্ন রকমের পায়েস বানানোর সঠিক রেসিপি

পায়েস বানানোর সঠিক রেসিপি না জানলে ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে কিন্তু আপনি কোনভাবেই তৈরি করতে পারবেন না। হয়তো পায়েস তৈরি করছেন ঠিকই কিন্তু যেই পরিমাণে সুস্বাদু হওয়ার কথা সেই স্বাদ কিন্তু আপনি খুঁজে পাবেন না। তাই পায়েস বানানোর পূর্বে এর সঠিক পদ্ধতি জানাটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন রকমের পায়েস বানানোর সঠিক রেসিপি রয়েছে। যদি এই সকল রেসিপিগুলো আপনার মাথায় থাকে তাহলে অল্প সময়ে সুস্বাদু মজাদার পায়েস তৈরি করতে পারবেন। তাহলে চলুন নিম্নরূপে দেখে নেওয়া যাক পায়েস বানানোর সঠিক রেসিপি কিভাবে তৈরি করা হয়।

  • প্রথমত, উপকরণ হিসেবে গোবিন্দভোগ চাউল অথবা পোলাও এর চাউল নিতে পারেন।
  • পায়েস তৈরি করার জন্যে এর সাথে দুধ, চিনি, এলাচ, তেজপাতা, কেশর, ঘি, কিসমিস, বাদাম, হালকা লবণ, খেজুরের গুড় এবং খেজুরের রস নিতে পারেন।
  • সকল উপকরণ যখন সংগ্রহ হয়ে যাবে তখন আপনি বিভিন্ন রকমের পায়েস তৈরি করতে পারবেন।
  • বিভিন্ন রকমের পায়েসের মধ্যে লাউ দুধের পায়েস, গাজরের পায়েস, খেজুর রসের পায়েস করতে পারেন।
  • এছাড়াও আতপ চালের পায়েস আপনি বাড়িতে বসেই তৈরি করতে পারবেন।
  • পায়েস তৈরি করার জন্যে আপনাকে প্রথমে চাল খুব ভালোভাবে ধুয়ে ছেঁকে নিতে হবে।
  • ছাঁকা হয়ে গেলে বড় একটি পাত্রে দুধ হালকা জ্বাল দিয়ে নিতে হবে।
  • এরপর দুধের মধ্যে এলাচ, দারুচিনি এবং তেজপাতা দিয়ে দিতে হবে।
  • যখনই দুধ একটু ঘন হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে ঘি দিয়ে খুব ভালোভাবে জ্বাল দিতে হবে।
  • চাল সেদ্ধ হয়ে আসলে কেশর দিয়ে নাড়াচাড়া করতে পারেন।
  • অল্প সময় পর খেয়াল করলে দেখবেন দুধ ধীরে ধীরে একটু ঘন হয়ে আসছে যা দেখতে অনেকটা ক্ষীর এর মত মনে হবে।
  • তখন এই সুস্বাদু মজাদার পায়েস নামিয়ে কুচি করা বাদাম ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

স্পেশাল খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস

খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস তৈরি করতে হলে এর মধ্যে গোবিন্দভোগ চাল দিতে পারেন। যখন পরিমাণমতো চাল নিয়ে নিবেন তখন এর মধ্যে দুধ এক লিটার এর মত দিতে পারেন। স্পেশাল খেজুরের গুড় প্রায় তিনশো থেকে চারশো গ্রামের মতো ব্যবহার করতে পারেন। কারণ আপনি যেই পরিমাণ মিষ্টি পছন্দ করেন সেই অনুযায়ী খেজুরের গুড় ব্যবহার করতে হবে।
সাবুদানা-দিয়ে-পায়েস-কিভাবে-তৈরি-করা-যায়
কুড়ানো নারকেল এক থেকে দুই কাপের মতো নিয়ে নিবেন। ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে দারুচিনি, তেজপাতা এবং কিসমিস নিয়ে নিতে হবে। এক টেবিল চামচের মত বাদাম কুচি করতে হবে। যখন এই সকল উপকরণগুলো আপনার হাতের কাছে থাকবে, তখন বড় পাত্রে এক লিটার দুধ খুব ভালো করে ফুটিয়ে ঘন করে নিতে হবে।

পানি ফুটানো হয়ে গেলে তেজপাতা, দারুচিনি, সামান্য লবণ এবং পানি দিয়ে হালকা আঁচে কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। যখন চাল সেদ্ধ হয়ে আসবে নামিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে গেলে বাদামকুচি এবং কিসমিস ছিটিয়ে দেওয়ার পর স্পেশাল খেজুরের গুড় দিয়ে সুস্বাদু পায়েস তৈরি হয়ে যাবে। এরপর স্পেশাল খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস খাওয়ার জন্যে পরিবেশন করতে পারেন।

মজাদার বিন্নি চাল দিয়ে পায়েস রান্না

বিন্নি চাল দিয়ে মজাদার পায়েস এর কথা শুনে কি অবাক হচ্ছেন? বিন্নি ধানের চাল থেকে বিন্নি পায়েস তৈরি হয় যা এতটাই সুস্বাদু যে একবার খেলে আপনার বারবার খেতে ইচ্ছে করবে। বিন্নি ধানের চাল আপনাকে ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে তৈরি করার জন্যে এক থেকে দুই কাপের মতো নিয়ে নিতে হবে।

তরল দুধ, চিনি, খেজুরের গুড়, এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা, নারকেল, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, ঘি এই সকল উপাদানগুলো সংগ্রহ করতে হবে। প্রথমেই এই পায়েস তৈরি করার জন্যে বিন্নি ধানের চাল খুব ভালোভাবে ধুয়ে ছেঁকে নিতে হবে। পায়েস তৈরি করার জন্যে একটি বড় পাত্রে দুধ নিয়ে খুব ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে।

যখনই দুধ ফুটতে শুরু করবে তখন এর মধ্যে তেজপাতা দিয়ে দিতে হবে। অল্প আঁচে ধীরে ধীরে জ্বাল দিয়ে এর মধ্যে চাল দিয়ে দিতে হবে। একটি পাত্রে ঘি নিয়ে এর মধ্যে কুড়ানো নারকেল ভেজে নিতে হবে। নামাতে যাওয়ার পূর্বে খেজুরের গুড় ছোট ছোট করে পায়েসের উপরে খুব ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।

এরপর কিছু সময় জ্বাল দিয়ে পায়েস উঠিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। চাল দিয়ে পায়েস তৈরি হয়ে যাওয়ার পর এর উপরে কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম এবং কাঠবাদাম কুচি কুচি করে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর মজাদার সুস্বাদু বিন্নি ধানের চাল দিয়ে তৈরি পায়েস খাওয়ার জন্যে সম্পূর্ণরূপে পরিবেশন করতে পারেন।

সাবুদানা দিয়ে পায়েস কিভাবে তৈরি করা যায়

খুব সহজে সাবুদানার পায়েস তৈরি করা যায় যা ঘরোয়া উপায়ে করা যায়। এই পায়েস তৈরি করার জন্যে আপনার প্রয়োজন হতে পারে সাবুদানা, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, কেওড়া জল, বাদাম কুচি, মোরব্বা, হ্যাভি ক্রিম, চিনি, লবণ ইত্যাদি। যদি আপনি অসাধারণভাবে সাবুদানার পায়েস তৈরি করতে চান তাহলে নিম্নরূপ থেকে এর সহজ প্রক্রিয়াটি জেনে নিতে পারেন।

  • পায়েস তৈরি করতে প্রথমে আপনাকে সাবুদানা প্রায় অল্প কিছু সময়ের জন্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
  • সাবুদানা ভিজিয়ে রাখার পর এটি থেকে পানি খুব ভালোভাবে ঝড়িয়ে নিয়ে চুলায় চাল দিতে হবে।
  • চুলার আঁচ একটু কমিয়ে দিয়ে সাবুদানা একটু পরপর নেড়ে দিতে হবে।
  • সাবুদানা সেদ্ধ হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে আরেকটি পাত্রে দুধ গরম করে নিতে হবে।
  • দুধের সাথে গুঁড়া দুধ এবং চিনি এর সাথে খেজুরের রস মিক্স করে নিতে পারেন।
  • যখন দুধ জ্বাল দেওয়ার পর একটু কমে আসবে তখন এর মধ্যে ক্রিম দিয়ে দিতে পারেন।
  • সেদ্ধ করে রাখা সাবুদানা খুব ভালো করে নেড়ে দেওয়ার পর পায়েস হয়ে এলে উঠিয়ে ফেলতে পারেন।
  • পায়েসের মধ্যে একটু কেওড়া জল মিক্স করে দিতে পারেন।
  • বাদাম অথবা মোরব্বা কুচি কুচি করে পায়েস পরিবেশন এর পূর্বে ছিটিয়ে দিতে পারেন।
  • গরম গরম সাবুদানার পায়েস পরিবেশন এর জন্যে এখন একদম তৈরি যা একবার মুখে দিলে বারবার খেতে মন চাইবে।

চুসি পিঠার পায়েস তৈরির সহজ উপায়

খুব সহজে চুসি পিঠার পায়েস তৈরি করতে হলে কিছু টিপস এপ্লাই করতে হবে। প্রথমে এই পায়েস তৈরি করার জন্যে আতপ চালের গুঁড়া তিনশো গ্রাম এর মত নিতে হবে। দুধ এক থেকে দুই লিটারের মতো নিতে হবে। ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে তৈরির মধ্যে এটি একটি। এর সাথে খেজুরের গুড় প্রায় এক কাপের মতো, পরিমাণমতো লবণ এবং পানি মিক্স করতে হবে। একটি ফ্রাই প্যানে পরিমাণমতো পানি এবং লবণ দিতে হবে।
প্রায় তিনশো গ্রামের মতো চাউলের গুঁড়ার একটি মন্ড তৈরি করে নিতে হবে। যখন মন্ড তৈরি হয়ে যাবে তখন খুব সহজেই চুসি তৈরি করা যায়। খুব ভালোভাবে মন্ড থেকে লম্বা করে লতার মত ছোট ছোট করে চুসি তৈরি করতে হবে। চুসি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর দুধ এবং গুড় একসাথে জ্বাল দিয়ে এর মধ্যে চুসিগুলো দিয়ে দিতে হবে। চুসিগুলো ফুটে যখন একটু ঘন হয়ে আসবে তখন ঠান্ডা করে পরিবেশন করতে পারবেন।

শেষকথা

প্রিয় পাঠক, যদি পায়েস আপনার পছন্দের খাবার হয়ে থাকে তাহলে এই অনুচ্ছেদটি আপনার জন্যে যা আপনার পায়েস তৈরির প্রক্রিয়াকে সহজ করেছে। ১১টি শীতের মজাদার পায়েস একই সাথে জেনে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন স্বাদের পায়েস তৈরি করতে পারবেন। যদি এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। মূল্যবান মতামত দিতে পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url