ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ

শরীরে পানিশূন্যতার সমস্যা হলে কি করবেনডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ না জানলে বিপদ হতে পারে। কারণ এই সময়ে শরীর একেবারেই পানি শূন্য হয়ে পড়ে। তাই ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ জেনে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত।
ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া নিয়মিত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
খাবার স্যালাইন এর পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। এর সাথে খেতে পারেন ভাতের মাড়, চিড়ার পানি যা খাওয়ার ফলে আপনার পানিশূন্যতা খুব সহজেই দূর হতে পারে।

পেইজ সূচিপত্র

ডায়রিয়া রোগের উপসর্গগুলো কি

যদি আপনার ডায়রিয়া হয় তাহলে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যার মধ্যে অধিকাংশ সময়েই প্রথম উপসর্গ হিসেবে আপনার স্বাভাবিক সময়ের পায়খানা হওয়ার থেকে একটু অন্যরকম হয়। যার মধ্যে হলো পায়খানা তরল হয়ে যাওয়া এবং একে ডায়রিয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে যেই সকল শিশুরা মায়ের দুধ পান করে তাদের পায়খানা কিছুটা তরল হলেও সেটিকে ধরা হয় না।


এই অবস্থায় শরীর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় এবং পানিশূন্যতা দেখা দেয়। মুখ শুকিয়ে আসবে এবং ঘন ঘন পানি পিপাসা লাগতে থাকবে। এমনকি চোখও শুকিয়ে আসতে পারে। যখনই একজন ডায়রিয়া রোগী প্রস্রাব করতে যাবে, তখন প্রস্রাব গাঢ় রঙের এবং দুর্গন্ধযুক্ত মনে হবে। সেই সাথে প্রস্রাব খুব বেশি একটা নাও হতে পারে।

ডায়রিয়া রোগ নির্ণয় করার উপায়

যেহেতু ডায়রিয়া একটি উদরাময় রোগ। তাই এই সময়ে শরীর স্বাভাবিকভাবেই খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীর থেকে অনেক বেশি পরিমাণে পানি ও প্রয়োজনীয় লবণ বের হয়ে যায়। ডায়রিয়া রোগ হওয়ার পরে যদি আপনি এটি নির্ণয় করতে না পারেন, তাহলে বেঁচে থাকার আশঙ্কাও কমে যেতে পারে।

কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় যখন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হবেন, তখন প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরও যদি আপনার পানিশূন্যতার ঘাটতি রয়ে যায়। তাহলে ধীরে ধীরে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এই রকম হয় যে ডায়রিয়া রোগ নির্ণয়ই করতে পারে না।

তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি বেড়ে যায়। তবে এই ডায়রিয়া রোগ নির্ণয় করার কিছু উপায় রয়েছে। চলুন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

  • যদি ডায়রিয়া রোগের কোন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়।
  • তাহলে প্রথমত আপনার পেটের মোচড়ানো শুরু হয়ে যেতে পারে।
  • পেট মোচড়ানোর পাশাপাশি পেট ব্যথাও করতে পারে।
  • শুধু তাই নয় ধীরে ধীরে ওজন কমে যেতে পারে এবং জ্বরও আসতে পারে।
  • জ্বরের সাথে অনেক বেশি পরিমাণে বমিও হতে পারে।
  • দেখা যাবে হঠাৎ করেই আপনার পায়খানার বেগ শুরু হয়ে যাচ্ছে।
  • অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় পায়খানার সাথে রক্তও বের হতে দেখা যায়।
  • যদি এই পেটের সমস্যাগুলো দুই দিনের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে তাহলে সমস্যাও বাড়তে থাকে।
  • পায়খানার সাথে অনেকের কালো রঙের রক্তও বের হতে দেখা যায়।
  • যেকোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে ডায়রিয়া রোগ হতে পারে।
  • অবস্থা যখন ধীরে ধীরে জটিল পর্যায়ে চলে যায় তখন বিপদও বাড়তে থাকে।
  • এবং অতিরিক্ত মাত্রায় পানি বের হয়ে যায়।
  • এই অবস্থায় দ্রুত ডাক্তারের কাছে নেওয়া উচিত।

ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হওয়ার কারণ

পাতলা জলের মতো যখন পানি আপনার পেট থেকে বের হয়ে যায়, তখন সেটিকে ডায়রিয়া নামকরণ দেওয়া হয়। এটি আপনার পরিপাক নালীর এমন একটি রোগ সেটি সম্পর্কে যদি কোন ধরনের ধারণাই না থাকে, তাহলে কিভাবে এই সমস্যা থেকে নিজেকে নিরসন করবেন। ডায়রিয়া হওয়ার পিছনে অনেক ধরনের কারণ রয়েছে।

যদি আপনার তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকে, অথবা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তাহলে এই ডায়রিয়া রোগ হতে পারে। আর তখনই ঘটে যত বিপত্তি। হয়ে যায় হজম শক্তির সমস্যাও। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হওয়ার কারণে এক ধরনের পরজীবী আপনার পেটের ভিতরে অবস্থান করতে থাকে।
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণ
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে পরজীবী পেটের ভিতরে হজম শক্তির সমস্যা করে
এটি আপনার শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানীয় বের করে দিতে থাকে। যখন আপনার উদর ধীরে ধীরে আরও বেশি সংক্রমিত হয়ে পড়ে, তখন পানীয় খাবার ভালোভাবে না খেলে অবস্থার অবনতিও করতে পারে। শুধু তাই নয় আপনি যদি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিয়মিত বসবাস করতে থাকেন।

তাহলে ধীরে ধীরে এই সংক্রমণ আপনাকে অনেক বেশি আক্রান্ত করতে পারে। শিশুরা অনেক বেশি পরিমাণে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এর জন্যে তাদের অনেক সময় রোটা ভাইরাস টিকা দেয়া হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে নিজের চিকিৎসা করুন। তা না হলে এই সমস্যায় মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে।

কি খেলে ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা বন্ধ হয়

যখন অনেক বেশি পরিমাণে পাতলা পায়খানা শুরু হয়ে যায়, তখন শরীরের অবস্থা স্বাভাবিক থাকে না। দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। শুরু হয়ে যায় শরীরের দুর্বলতা। এই অবস্থায় আপনার যখনই ডায়রিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাবে তখন বুঝতে হবে।

শরীরের লবণের ঘাটতি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তাই এই সময় আপনার সেই ধরনের খাবারগুলো প্রয়োজন, যা আপনার পাতলা পায়খানাকে বন্ধ করতে পারে। চলুন তার বিস্তারিত জেনে আসি।

  • যদি কখনো পাতলা পায়খানা হয়ে যায় তাহলে কাঁচা কলা সিদ্ধ করে খেতে পারেন।
  • কাঁচা কলাকে তরকারি হিসেবে রান্না করেও খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
  • এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম এবং খনিজ লবণ যা আপনার পায়খানা বন্ধ করতে সাহায্যে করতে পারে।
  • কারণ কাঁচা কলা খাওয়ার ফলে আপনার পায়খানা ধীরে ধীরে শক্ত হতে শুরু করে।
  • এই সময়ে দই বা ঘোল খেতে পারেন।
  • কারণ এতে যেই পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তা ডায়রিয়া ভালো করতে সাহায্যে করতে পারে।
  • শরীর পানি শূন্য হয়ে পড়লে কিডনির নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • পানিশূন্যতা দূর করতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন।
  • শুধু তাই নয় যখন শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যাবে তখন আপনি ডাবের পানীয় খেতে পারেন।
  • তরল পানীয় খাওয়ার মধ্যে আপনি ভাতের মাড় খেতে পারেন এবং মাঝে মাঝে চিড়ার পানিও খেতে পারেন।
  • ভাতের মাড় খাওয়ার সময় সেখানে অল্প পরিমানে ছিটকে লবণ দিয়ে নিতে পারেন।

ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না

শুধু ডায়রিয়া হলে কোন ধরনের খাবার খাবেন, এটি মাথায় রাখলে চলবে না। আপনার কোন ধরনের খাবার খেলে ডায়রিয়া হয় এবং সেইগুলো থেকে কিভাবে বিরত থাকবেন তাও জানতে হবে। ডায়রিয়া অনেক বেশি পরিমাণে শুরু হয়ে গেলে তখন আপনি বাড়ির বাহির থেকে অর্থাৎ বাজার থেকে কেনা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করতে পারেন।

এর মধ্যে বাহিরের তৈরি করা ফলের জুস, কোমল যেকোন ধরনের পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে পারেন। এছাড়াও তৈলাক্ত যেকোন ধরনের খাবার এবং অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে যদি নিয়মিত চা, কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে।

তাহলে এই অসুস্থ অবস্থায় সেটিও না খাওয়া আপনার জন্য ভালো। এতে করে আপনার হজম শক্তি ঠিকমতো হয় না। যার ফলে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়।

ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়

পাতলা পায়খানা হলে কখন এটি সেরে আসবে, সেটি নিয়ে হয়তো চিন্তার শেষ থাকে না। ডায়রিয়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। কিন্তু ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ যদি নাই জানেন, তাহলে কিভাবে সেটির মাধ্যমে সমাধান করবেন। নিম্নরূপ থেকে এর বিস্তারিত দেখতে পারেন।

  • নিয়মিত যদি ডালিমের বীজ খেতে পারেন তাহলে পাতলা পায়খানা দূর হতে পারে।
  • প্রতিদিন নিয়মিত দুই থেকে তিনটি করে ফল খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
  • কারণ পাতলা পায়খানা ভালো হওয়ার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।
  • যদি আপনি ডালিমের বীজ এমনিতে না খেতে পারেন, তাহলে ব্ল্যান্ড করে এটিকে জুস করে পানীয় হিসেবে খেতে পারেন।
  • যদি ভালো ফলাফল পেতে চান তাহলে প্রতিদিন তিন থেকে চার গ্লাসের মত করে খাবেন।
  • এছাড়াও এই ডালিমের পাতা খুব ভালোভাবে যদি ভিজিয়ে নিয়ে ফুটিয়ে রাখেন তাহলে সেটিরও পানি খেতে পারেন।
  • আপনার বাড়িতে যদি মধু থাকে, তাহলে এর সাথে হালকা দারুচিনি গুড়ো মিক্স করে খেতে পারেন।
  • সরিষার বীজে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে খুবই সাহায্যে করে থাকে।
  • প্রয়োজনে লেবুর রস করে খেতে পারেন। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান রয়েছে।
  • ঘোল তৈরি করে বাড়িতে খেতে পারেন এবং এর সাথে সামান্য পরিমাণে হালকা জিরার গুঁড়ো ো মিক্স করে নিতে পারেন।
  • মাঝে মাঝে সাবুদানাও খেতে পারেন। কারণ এটি পাতলা পায়খানা রোধ করতে খুব বেশি সাহায্যে করে থাকে।
  • পাতা ভালো করে ছেঁচে নিয়ে রস করে এর সাথে মধু মিক্স করে দিনে দুই থেকে তিনবার খেতে পারেন।
  • যদি বাড়ির পাশে বেলগাছ থাকে, তাহলে বেলপাতা সংগ্রহ করে পাউডার করে নিয়মিত খেতে পারেন।
  • লাউয়ের রস খেতে পারেন। কারণ এটি অনেক বেশি পরিমাণে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্যে করে। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডি হাইড্রেট হওয়ার উপাদান।

পাতলা পায়খানার সাথে বমি হলে এর প্রতিকার কি

পাতলা পায়খানার সাথে যদি বমি হয়, তাহলে এই অবস্থায় আপনাকে প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় খেতে হবে। সেই সাথে কোন ধরনের মানসিক এবং শারীরিক চাপ যুক্ত কাজ করা যাবে না। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সেই সাথে আপনি ফলের জুস খেতে পারেন। পাশাপাশি দুই থেকে এক ঘন্টা পর পর খাবার স্যালাইন খেতে পারেন।

এর সাথে চিড়ার পানি খেতে পারেন। যদি এইক্ষেত্রে আপনার বমি ভাব হয়, তাহলে অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন। এই সময় আপনাকে একটু পর পর খেতে হবে। ভাতের মাড় খেতে পারেন তবে ভাতের মাড় খাওয়ার ক্ষেত্রে এর মধ্যে আপনি সামান্য পরিমাণে হালকা নুন ছিটকে দিতে পারেন। শিশুদের ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা হলে বমি হয়।
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না
তৈলাক্ত এবং মশলাযুক্ত খাবার, ফলের জুস, কোমল পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে
তাহলে কিছু সময় পর পর খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। খুব বেশি খারাপ লাগলে আপনি একটি প্যারাসিটামল অথবা নাপা খেয়ে নিতে পারেন। কারণ এই সময়ে শুধু আপনার পাতলা পায়খানাই নয় এর সাথে জ্বরও আসতে পারে। তাই শরীর যাতে খুব বেশি দুর্বল না হয়ে যায় সেই জন্যে ওষুধ খেতে পারেন।

চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ নিয়ে আপনি ডায়রিয়া কমানোর সিরাপ অথবা ট্যাবলেট যেকোন কিছু খেতে পারেন। তবে পায়খানার সাথে বমি হলে আপনি রান্নাবান্না থেকে নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন। নিজের ব্যবহৃত থালাবাসন, গামছা তোয়ালে, কাপড় আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।

এই অবস্থায় আপনি দুই থেকে তিন সপ্তাহ পার না হওয়া পর্যন্ত কোন ধরনের সুইমিং পুলে যাবেন না। অবস্থা যদি খুব বেশি জটিল হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তা খাবেন।

ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে করণীয়

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে আপনার হয়তো হুশও হারিয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় আপনি যদি নিয়ম মেনে না চলে উল্টোপাল্টা ভাবে চলেন, তাহলে শরীর ধীরে ধীরে পানি শূন্য হয়ে খারাপের দিকে যেতে পারে। এই অবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে। চলুন সেইগুলো সম্পর্কে একটু জানা যাক।

  • এই অবস্থায় আপনাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করতে হবে।
  • সেইজন্যে যখনই আপনি হাত পানি দিয়ে ধৌত করতে যাবেন তখন সাবান ব্যবহার করবেন।
  • ডায়রিয়া হলে ব্যবহৃত কাপড় অথবা বিছানাপত্র খুব ভালোভাবে গরম পানি দিয়ে ধৌত করে রাখতে হবে।
  • আপনি যেখানেই হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না কেন হতে পারে সেটি দরজার হাতল অথবা পানির কল যেকোন কিছুই হতে পারে।
  • হাত দিয়ে স্পর্শ করার সময় জীবাণু আপনার সংস্পর্শে হাত চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • নিয়মিত আপনাকে আপনার ব্যবহৃত সব ধরনের জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • নিজের ব্যবহ্নত থালা বাটি, গামছা তোয়ালে অন্য কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না।
  • শিশুর পানিশুন্যতার লক্ষণগুলো জটিল সমস্যা হিসেবে খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
  • এই সময় শিশু পূর্বের থেকেও কাঁথা অথবা ডায়পার কম ভিজিয়ে থাকে।
  • এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া নিয়মিত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত

ডায়রিয়া হওয়ার সাথে সাথেই অনেকে ওষুধ খেতে চায় না। হয়তো ভাবে যে এটা এমনিতেই সেরে যাবে। কিন্তু যখন জটিল আকারে বেড়ে যায়, তখন ওষুধ খাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে। যেই পরিমাণে পানি এবং লবণ আপনার শরীর থেকে বের হয়ে যায়, সেই পরিমাণে যদি পুষ্টি আপনার শরীরে না থাকে তাহলে সমস্যা বেড়ে যায়।


সেইজন্যে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরেও আপনাকে ওষুধ খেতে হয়। বাজারে চলমান কিছু ডায়রিয়া সারানোর ওষুধ রয়েছে। এর মধ্যে সিপ্রোসিন, ইমোটিল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, মেট্রোনিডাজল, ফ্ল্যাজিল, লপেরামাইড জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধগুলো খেতে পারেন।

আপনার ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করার সমস্যা এই ওষুধগুলো খাওয়ার মাধ্যমে সারাতে পারেন। যেহেতু ডায়রিয়া কখনো দেখা যায় ফুড পয়জনিং এর কারণে হয়ে যায়। সেইক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

ঘন ঘন ডায়রিয়া হলে কিভাবে সতর্ক হবেন

ঘন ঘন ডায়রিয়া অথবা পাতলা পায়খানা হলে কিভাবে নিজেকে সতর্ক করবেন, যদি সেই পদ্ধতি আপনার জানা না থাকে। তাহলে কিভাবে নিজেকে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করবেন। তাই ডায়রিয়া থেকে নিজেকে সতর্ক রাখার টিপসগুলো চলুন দেখি।

  • প্রথমেই যদি বলতে হয় তাহলে বাহিরের তৈলাক্ত খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
  • বাজারের কেনা বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস এবং কোমল পানীয় না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • একটু পরপর খাবার স্যালাইন খেয়ে যেতে হবে।
  • সেই সাথে মাঝে মাঝে হালকা লবণ ছিটকে দিয়ে ভাতের মাড় খেতে পারেন।
  • তবে আপনার বয়স অনুযায়ী অবস্থা বোঝে ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
  • পুষ্টিহীনতা থেকেই ডায়রিয়া রোগ হতে পারে। তাই পুষ্টিযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
  • শিশুদের নিয়মিত বুকের দুধ এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।
  • ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
  • নিজেকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন।
  • পরিবারকে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করার বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন করুন।

শেষের মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগণ, এখন আপনি নিশ্চয়ই পাতলা পায়খানা হলেই আর ভয় পাবেন না। ডায়রিয়া বা তরল পায়খানা হলে কি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তা জেনে এখন থেকে খাওয়া শুরু করতে পারবেন। পোস্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ডায়রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।

তাহলে আশেপাশের সকলকে এই বিষয়ে সচেতন করতে পারেন। এই বিষয়ে যদি আরও কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে পোস্টের নিচে মন্তব্য করুন এবং অজানা আরও কিছু বিষয় জানতে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url