নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা - শসা কি কিডনির পাথর গলায়

শসা খেলে কি ওজন কমে আসেনিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক যা অত্যন্ত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। আপনার শরীরের ভিতরের জ্বালাপোড়া কমিয়ে বর্জ্যকে খুব সহজে অপসারণ করতে পারে। নিম্নরূপে নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে দেখুন।
নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
শসার এমন কিছু উপকারিতা রয়েছে যা কিডনিতে পাথর হলে সেটিও পর্যন্ত দূরীভূত করে দিতে পারে। কিন্তু সঠিক উপায়ে খেতে হবে যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারেন।

পেইজ সূচিপত্র

দৈনিক কতটুকু করে শসা খাওয়া উচিত

যদি আপনার নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে দৈনিক কি পরিমান শসা খাবেন, তাও কিন্তু আপনার জানা উচিত। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খেলে সেটি আবার হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে শসা খাওয়া উচিত। সেই হিসেবে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কি পরিমান শসা দৈনিক খাওয়া উচিত।


যদি আপনি নিয়মিত এক থেকে দুইটি শসা খেয়ে থাকেন তাহলে সেটি সকাল, দুপুর এবং রাতে ভাগ করে নিতে পারেন। নিজেকে স্বাস্থ্য সচেতন রাখতে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় হয়ে উঠতে পারে অন্যতম একটি ক্যালোরি যুক্ত খাবার।

মজার ব্যাপার হচ্ছে শসা কি কিডনির পাথর গলায়? এই সবজি কম ক্যালোরি যুক্ত হওয়ার কারণে আপনার শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি জমে যেতে পারে না। পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর হওয়ার কারণে পানীয় হিসেবে নিজের শরীরের চাহিদা পূরণ করতে পারেন।

শরীরে পানির পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘাটতি মেটায় বলে এটি আপনার জন্যে খুবই উপকারী হতে পারে। নিজের শরীরের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে শসা খেতে পারেন। কারণ এটি আপনার শরীরের সমস্ত বর্জ্য জলীয় পদার্থের মাধ্যমে খুব সহজেই বাহিরে বের করে দিতে পারে।

শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম কোনগুলো

শুধু শসা খেলেই চলবে না শসা খাওয়ার জন্যে এর সঠিক নিয়মগুলো সম্পর্কেও জানতে হবে। যদি আপনি শুধু শসা চিবিয়ে খেতেই থাকেন কিন্তু ঠিক সময়ে খেলেন না, তাহলে কিন্তু এটি আপনার সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সঠিক নিয়মে শসা খেতে হলে নিম্নরূপে বিস্তারিত চলুন দেখি।

  • পর্যাপ্ত ভিটামিন এবং মিনারেল থাকায় শসা আপনার শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করে।
  • যদি আপনি ডায়েটের জন্যে শসা খান তাহলে নিয়মিত খেতে হবে।
  • মাঝে মাঝে আপনি শসার স্যালাদ করে খেতে পারেন।
  • যেহেতু এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ রয়েছে তাই ডায়েটের জন্যে খুবই উপকারী।
  • পনের থেকে বিশ দিনের জন্যে আপনি নিয়মিত শসা খেতে পারেন।
  • শসা খাওয়ার জন্যে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবেন।
  • সবজি হিসেবে শসা আপনার ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে।
  • নিয়মিত নিয়ম করে শসা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের মেদ খুব সহজেই কমাতে পারবেন।

খালি পেটে শসা কেন খাবেন

হয়তো আপনি সব সময় শসা খেয়ে থাকেন কিন্তু কোন সময় কিভাবে খেতে হবে তা হয়তো আপনার জানা নাও থাকতে পারে। যদি আপনি নিয়মিত খালি পেটে শসা খেতে পারেন তাহলে আপনার পেট সব সময় ঠান্ডা থাকবে। পেটের ভিতরে এক ধরনের জ্বালাপোড়া অনেকেরই হয়ে থাকে।

এই জ্বালাপোড়া নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে শসা খাওয়া। যদি আপনি কোনভাবে নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করে ফেলতে পারেন, তাহলে এটি আপনার দেহের ভিতরের বিভিন্ন রোগের উৎপত্তি খুব সহজেই কমাতে পারে। কারণ শসা খাওয়ার ফলে আপনার শরীর খুব ভালোভাবে হাইড্রেটেড হয়।

সোডা জাতীয় যেকোন পানীয় এর পরিবর্তে আপনি শসা খেতে পারেন। খালি পেটে নিয়মিত শসা খাওয়ার পরে আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে, তাহলে সেটিও খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে পারে। এর জন্যে আপনি শসার জুস করেও খেতে পারেন। যা আপনার শরীরের পানিশূন্যতা কমিয়ে আনতে পারে।

প্রতিদিন রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা

হয়তো না বুঝেই শসা খেয়ে থাকেন কিন্তু এই শসা খাওয়ার ফলেও যে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকার হচ্ছে তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন? বিশেষ করে গরমের সময়ে শসা খেতে কমবেশি সবারই মনে ইচ্ছা জাগে। পরিমাণ মতো প্রতিদিন শসা খাওয়ার যে উপকারিতাগুলো আপনি পাবেন তার কিছু ধারণা নিম্নরূপ থেকে নিতে পারেন।

১। অতিরিক্ত খাদ্যাভাসের নিয়ন্ত্রণঃ প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আপনার মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি শরীরের ওজন বেড়ে যায় যার ফলে আপনার মধ্যে অস্বস্তি ভাব সৃষ্টি হতে পারে।

যখন আপনি নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাবেন তখন আপনার অতিরিক্ত খাদ্য খাওয়ার চাহিদাও কমে যাবে। যার ফলে আপনি পেতে পারেন এক অন্যরকম স্বস্তি এবং আরাম।

২। ওজন কমাতে সাহায্যে করেঃ যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে মেদ জমে রয়েছে তারা যদি নিয়মিত শসা খায়, তাহলে তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ হতে পারে। এই অবস্থায় শসা আপনি বিভিন্নভাবেই খেতে পারেন।

যেহেতু এটি খুবই সুস্বাদু একটি সবজি। তাই ওজনের সাথে শসার গভীর এক আদান প্রদান রয়েছে। কারণ শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানির মাত্রা থাকায় সব সময়ই আপনার পেটের ক্ষুদা নিবারণ থাকবে।

৩। কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া থেকে বাঁচায়ঃ শসাতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে যা আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। যেহেতু এতে বীজের পরিমাণ বেশি থাকে তাই খুব সহজেই আপনাকে এই সমস্যা থেকে দূরে রাখতে পারে।

৪। ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ শসা যে সবসময় ত্বকের আদ্রতা বাড়ায় সেটি কি আপনি কখনো জানতেন। শসা শুধু আপনার শরীরের উপকারই করে না, এটি আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় যা আপনি খাওয়ার পর বুঝতে পারবেন।

শসাকে আপনি বিভিন্ন আইটেমের খাবারের সাথে স্ন্যাকস হিসেবেও খেতে পারেন। গবেষকগণ বলে থাকেন যে শসাতে প্রায় পঁচানব্বই ভাগের মত পানীয় বিদ্যমান রয়েছে। যা আপনার দৈনিক পানির চাহিদা পূরণ করতে পারে।

৫। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ যদি আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার থাকে তাহলে কিভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে।

তাই এই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারকে দূরে ঠেলে দিতে আপনাকে নিয়মিত শসা চিবিয়ে খেতে হবে। যা আপনার শরীরে শর্করা এর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্যে করতে পারে। খুব সহজেই আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে আপনাকে দিতে পারে রোগমুক্তির নিশ্চয়তা।

৬। পেট ফোলে যাওয়া কমায়ঃ দেখা যায় হঠাৎ করে পেট ফোলে থাকে। শরীর থেকে খুব সহজেই পানি বের হতে পারে না। কিন্তু এই অবস্থায় আপনি যদি নিয়মিত শসা খান তাহলে কিন্তু আপনার এই সমস্যা চলে যাবে। শরীরের পানি আটকে থাকবে না যার ফলে সমস্যাও খুব তাড়াতাড়ি দূর হবে।

৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ শসা যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে তা আপনি কতটুকু জানেন? রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে আপনি কত কিছুই না খেয়ে থাকেন।

কিন্তু এর মধ্যে চোখের সামনে থাকা সবজি শসাকে নিয়মিত খেলে অন্যান্য সবজি গুণ থেকে তিনগুণ বেশি পরিমাণে পুষ্টি পাবেন। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অল্পতেই বাড়িয়ে দিতে পারে।

৮। শরীরের পানিশূন্যতা দূর করেঃ হয়তো আপনার শরীরে অনেক বেশি পানিশূন্যতার অভাব দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় আপনি পরিমিত পরিমাণে শসা খাওয়ার জন্যে তৈরি হতে পারেন। কারণ এই অবস্থায় আপনি যদি শসা চিবিয়ে খান তাহলে আপনার খুব সহজেই পিপাসা মিটে যাবে। সেই সাথে শরীরের পানিশূন্যতার ঘাটতিও পূরণ হবে।

৯। ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করেঃ আপনার দৈনিক খাদ্য তালিকায় হয়তো পর্যাপ্ত ভিটামিনজনিত খাদ্য খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু একটি মাত্র সবজি শসা যা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি বেশিরভাগই পূরণ হতে পারে।

যা আপনার শরীরের শক্তি দ্বিগুণ করে দিতে পারে। সবুজ শাকসবজি এর সাথে যদি শসার রস নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে খুবই সহায়ক হয়।

১০। হজমে সহায়তা করেঃ শরীরে হজম শক্তি বাড়াতে শসা খুবই কার্যকরী। কারণ এটি আপনি যদি নিয়মিত স্যালাদ হিসেবে খেয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার হজমে এটি কতটা সাহায্যে করে। 

খাবার খাওয়ার পরে যখন আপনি পরিমিত পরিমাণে শসা চিবিয়ে খাবেন, তখন দেখবেন আপনার একটি বড় ধরনের ঢেকুর আসছে যা খাবারকে হজম করতে খুবই সাহায্য করে থাকে।

১১। শরীর থেকে বর্জ্য দূর করেঃ আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে জমে থাকা বর্জ্য খুব সহজেই দূর করতে সাহায্যে করে থাকে। শসা যা দৈনিক খাওয়ার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন, নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত পানিকে অতি অল্প সময়ের মাঝেই বের করে দিতে পারে।

১২। ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্যে করেঃ শসার ক্যান্সার প্রতিরোধ করার মত যেই ধরনের অত্যন্ত শক্তিশালী উপাদান রয়েছে, তা আপনার হয়তো অজানাও থাকতে পারে। নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা এর ফলে এটি আপনার শরীরে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রিয়া গড়ে তোলে।

যার ফলে মূত্রের ক্যান্সার, জরায়ুর ক্যান্সার এবং শরীরের অন্যান্য জায়গার ক্যান্সার হওয়া থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে।

১৩। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করেঃ বেশিরভাগ লোকেরই চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে দেখা যায়। যার ফলে তাদের চেহারার সৌন্দর্য খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। চেহারার মধ্যে চলে আসে বয়সের ছাপ যা খুবই দুঃখজনক বিষয়।

এই অবস্থায় চোখে নিজের কালো দাগ দূরীভূত করতে হলে শসা গোল করে কেটে চোখের উপরে এবং নিচে খুব ভালোভাবে পনের থেকে বিশ মিনিটের জন্য নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন কতটা তাড়াতাড়ি চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়েছে।

কিডনির পাথর গলতে কি শসা সাহায্যে করে

কিডনিতে পাথর হওয়া রোগীদের কতই না কষ্ট সহ্য করতে হয়। কারণ কিডনিতে পাথর হলে বেশিরভাগই আপনার পেটে ব্যথা করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় শসা হতে পারে আপনার একমাত্র বন্ধু। শসা চিবিয়ে খাবেন যা আপনাকে খুব সহজেই আরাম দিতে পারে। এর জন্যে আপনার প্রয়োজন হতে পারে।

শসা কি কিডনির পাথর গলায় কিছু জানেন কি? নিয়মিত পরিমিত শসা খাওয়ার যা ইউরিক এসিডের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্যে করতে পারে। কারণ এতে করে আপনার কিডনি খুব ভালোভাবে সুস্থ থাকবে। আপনার কিডনি ভালো রাখার জন্যে যেই ধরনের ভেষজ উপাদান প্রয়োজন তার সবগুলো গুণাগুন শসাতে রয়েছে।
দৈনিক কতটুকু করে শসা খাওয়া উচিত
শসাতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পর্যাপ্ত ক্যালোরি থাকায় এটি আপনার শরীরের সকল চাহিদাকে খুব সহজেই পূরণ করতে পারে। খুব সহজেই নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা এর জন্য আপনি কিডনির দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

কারণ কিডনিতে পাথর হলে সেটি খুব সহজেই বের হয়ে আসতে চায় না। আপনার প্রস্রাবের সাথে কিডনির পাথর করে বের করে আনতে হলে অনেক বেশি করে শসা খেতে হবে। কারণ শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানীয় রয়েছে যা মূত্রাশয় দিয়ে পাথর বের করে আনতে সাহায্যে করে থাকে।

দেহের সকল ধরনের বর্জ্য এবং দূষিত পদার্থ ইউরিন এর মাধ্যমে পানীয় আকারে বের করে দেয়। এতে করে কিডনিতে যেই পাথর সৃষ্টি হয় তা খুব সহজেই প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে আসতে পারে।

শরীরের মেদ কমাতে শসার গুরুত্ব কতটুকু

হয়তো আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না শরীরের মেয়াদ কমানোর জন্য শসা কতটুকু সাহায্যে করতে পারে। কিন্তু এটিই সত্যি যে নিয়মিত শসা আপনার শরীরের মেদ কমাতে অনেক সাহায্যে করে। শসা আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার যা আপনার খাদ্য তালিকার প্রথম সারিতে রাখতে পারেন।

কারণ যারা প্রচুর পরিমাণে ডায়েট করে থাকেন তারা যদি শসা না খান, তাহলে আপনার মেদ খুব সহজে কমে আসার সম্ভাবনা কম থাকতে পারে। কারণ যদি আপনার ক্ষুধা অনেক বেশি থাকে তাহলে আপনার মেদ তো বাড়বেই। তাই শসার গুরুত্ব ঠিক কতটুকু হতে পারে চলুন সেই সম্পর্কে একটু দেখি।

  • শসা অত্যন্ত কম ক্যালোরিযুক্ত সবজি হওয়ায় মেদ খুব সহজেই কমায়।
  • ডায়েটের জন্যে শসা এক নাম্বার একটি সবজি যা আপনি নিয়মিত খেতে পারেন।
  • এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি খুব সহজেই কাটাতে পারে।
  • এমনকি যদি আপনার শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত ও দুর্বল থাকে তাহলে সেটিও নিরসন করতে সাহায্যে করে।
  • কিউকার নামক এক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকায় শসা চিবিয়ে খাবেন যা খুবই কার্যকরী।
  • বদহজম এবং পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব এই ধরনের সমস্যা নিরসনে শসার গুরুত্ব অনেক।
  • শরীরে যদি পর্যাপ্ত গ্লুকোজের ঘাটতি থাকে তাহলে শসা খাওয়ার ফলে খুব সহজেই সেই ঘাটতি পূরণ হবে।

শসা খাওয়ার ফলে কি ঘুম হয় ভালো

আপনি কি জানেন শসা খেলে খুব ভালো ঘুম হয়। শসা আপনার হার্টের সমস্ত ঝুঁকিকে কমিয়ে আপনাকে একটি আরামদায়ক ঘুম উপহার দিতে পারে। শুধু তাই নয় শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও এই শসা খাওয়ার মাধ্যমে আপনি করতে পারেন তবে যদি নিয়মিত খেতে পারেন


তাহলে শরীরে হাইড্রেশন এর চাহিদা খুব সহজেই পূরণ হবে দৈনিক চাহিদা পূরণে শসা হয়ে উঠতে পারে আপনার একমাত্র সঙ্গী। আরামদায়কভাবে ঘুমাতে কে না চায়। যদি আপনি নিজেকে স্বস্তি দিতে চান, তাহলে নিয়মিত শসা খেতে পারেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি এবং শক্তি শসা খাওয়ার মাধ্যমে পেতে পারেন।

খুবই কম ক্যালোরি থাকায় নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে এটি হজমেও খুব ভালো সহায়ক হয়ে থাকে। তাই সারাদিনের ক্লান্তি এবং পরিশ্রমের পর যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন, তখন নিশ্চিন্ত মনে একটি শসা খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারেন।

প্রয়োজনের বেশি শসা খাওয়ার অপকারিতা

উপকারী খাবার হিসেবে নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা শুনে শসা সবাই খেয়ে থাকে। কিন্তু শসা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনার হিতে যে বিপরীত হতে পারে সেটি আপনি কতটুকু জানেন। কারণ অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা।

সেই সাথে অনেক বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় ভাত তরকারির সাথে স্যালাদ হিসেবে শসা খেয়ে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেললে সেটি জন্যে আপনার নিজেকেই দায় নিতে হবে। এর কিছু ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে চলুন দেখি।

  • শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে টক্সিন জমে যেতে পারে যার ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
  • কারণ শসাতে রয়েছে কিউকার বিটাসিনস এবং টেরাসাইক্লিক টাইটের পেনয়ডন।
  • এই দুটি টক্সিন সামান্য পরিমাণে শসা খেলে ক্ষতি করতে পারে না।
  • যখন অতিরিক্ত খেয়ে ফেলবেন তখন বিভিন্ন সমস্যা আপনার শরীরে সৃষ্টি হবে।
  • এছাড়াও রয়েছে হাইপার ক্যালেমিয়া যা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পটাশিয়াম বাড়িয়ে দেয়।
  • যার ফলে আপনার পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
  • এর মধ্যে একাধিক সমস্যা হচ্ছে পেটে ব্যথা এবং কিডনির সমস্যা।
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে যা অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে হয়।
  • তাই নিয়মিত দুই থেকে তিনটি শসার বেশি না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

শসার রস কি পেটে সমস্যা করতে পারে

আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন অতিরিক্ত শসার রস আপনার পেটে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করবে। কারণ শসা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস তৈরি করে। অনেক সময় পেট ফোলেও যেতে পারে। যেহেতু অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়।

তাই দেখা দেয় হাইপার ক্যালেমিয়া এর মত এক ধরনের রোগ। হয়তো আপনার কাছে কচ কচ করে শসা খেতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু অতিরিক্ত শসা খাওয়ার পরে এর প্রতিক্রিয়া সহ্য করাটা খুবই কষ্টকর। গরমের সময় অনেক বেশি হয়ত শসা খেয়ে থাকেন কিন্তু তা ক্ষতিকর।

গবেষণা করে পাওয়া যায় যে অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে পেটের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যার মধ্যে পেটে গ্যাস হওয়া এবং পেটে ব্যথার লক্ষণই বেশি প্রকাশ পায়। সেই সাথে কিডনির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

মধু এবং শসা কি ওজন কমাতে সাহায্যে করে

মধু এবং শসা খাওয়ার মজাই আলাদা। যখন আপনি শসার সাথে মধু ভরিয়ে খেতে থাকবেন, তখন অন্যরকম একটি স্বাদ পেতে পারেন। কারণ মধু এমন একটি শক্তিশালী জাদুকরি উপাদান যা নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা এর ফলে আপনার ওজন খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে। সেই সাথে যদি শসা হয় তাহলে তো কথাই নেই। 

ম্যাজিকের মত আপনার ওজন অল্প সময়ের মধ্যে হ্রাস পাবে। তবে আপনার ওজন কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে যার প্রমাণস্বরূপ আপনি কিছুদিন খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করার উপাদান।
শরীরের মেদ কমাতে শসার গুরুত্ব কতটুকু
যা আপনাকে যেকোন ধরনের জটিল রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। বিশেষ গুণাবলী সম্পন্ন মধু এবং শসা আপনাকে সংক্রামক বিভিন্ন জীবাণুর হাত থেকে বাঁচাতে পারে। শুধু তাই নয় আপনি যদি নিয়মিত ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে শসা খান তাহলে আপনার ঘুমও খুব ভালো হবে।

প্রাকৃতিক ভাবে মধু এবং শসা আপনার শরীরে মহাঔষুধ হিসেবে কাজ করে। ওজন কমাতে হলে নিয়মিত মধু এবং শসা খাওয়ার ফলে আপনি নিজেকে খুব সহজেই ফিট রাখতে পারবেন। এতে করে আপনার হজম শক্তিও খুব ভালো হবে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্যে করবে এবং আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে কি হয়

নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা শুনে মজা করে দৈনিক শসা তো খাচ্ছেন। কিন্তু অতিরিক্ত শসা খেলে খাওয়ার ফলে শরীরে যেই বিষাক্ত টক্সিন থেকে যায় তা কতটুকু জানেন। যদিও শসা অনেক সময় তেঁতো লাগতে পারে।

কিন্তু এতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে ক্ষতিকর কিছু রাসায়নিক উপাদান যা আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিরও কারণ হতে পারে। অত্যাধিক পরিমাণে খাওয়ার ফলে যেই সমস্যাগুলো হয় তার ধারণা নিম্নরূপ থেকে নিতে পারেন।

  • কিউকার বিটিন নামক এক ধরনের উপাদান শসাতে বিদ্যমান।
  • যার ফলে আপনার ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
  • এমনকি কিডনির সমস্যাও হয়ে যেতে পারে।
  • কারণ এত যেই পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে তা যদি শসা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে বেড়ে যায় তাহলে হাইপার ক্যালেমিয়া দেখা দিবে।
  • শসা বেশি খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হবে।
  • যার ফলে আপনার রক্তনালী গুলোর মধ্যে চাপ পড়তে পারে।
  • আপনার যদি শ্বাসকষ্ট এর সমস্যা থাকে তাহলে শসা না খাওয়াই ভালো।
  • তাই অতিরিক্ত শসা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একটু সচেতন হয়ে নিবেন।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা রাখার কারণে শরীরে ঢুকছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। সেই সাথে নিয়মিত শসা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা জেনে রাখার কারণে আপনিও অন্যকে খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারবেন।

যদি বিস্তারিত আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আশেপাশের সকলকে অনুচ্ছেদের বিস্তারিত শেয়ার করতে পারেন। আপনার মূল্যবান মতামত দিতে পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url