চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে

চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে জানা আছে কি? পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে সঠিক তথ্য জেনে এটিকে প্রথমেই রাখতে পারেন।
চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে
চিয়া সিড শুধু সাধারণ কোনো বীজ নয়। এটি হচ্ছে এমন একটি সুপারফুড যা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের অধিকাংশ পুষ্টিগুণের চাহিদা পূরণ হতে পারে। যদিও এটি দেখতে মনে হয় তোকমা দানার মত। কিন্তু অনেক বেশি ছোট আকৃতির হওয়ায় কালো রঙের মতো দেখা যায়। তবে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এই চিয়া সিড অনেক বেশি উপকার করতে পারে।

পেইজ সূচিপত্র

ভূমিকা

শুধু অনেকে চিয়া সিড নামে এক ধরনের যেই বীজ রয়েছে এটিই জেনে থাকেন। কিন্তু শুধু জানলেই হবে না খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এই সুপার ফুড আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। দেখা যায় নিয়মিত আপনি শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করতে পারেন। তাই যখনই আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্লান্তি যুক্ত কোন কিছু করবেন।


তখনই এর পরে যদি চিয়া সিড খান তাহলে নিজেকে অনেক বেশি ক্লান্তিহীন মনে হবে। চিয়া সিডে অসাধারণ কতগুলো পুষ্টিগুণ রয়েছে তা না জানার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত, এই খাবার না খেয়ে নিজেদের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করে যাচ্ছি। আপনার মেটাবলিক সিস্টেম বাড়ায় এবং কোলনকে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে সাহায্যে করে।

এতে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোজেনিক এবং ক্যাফিক অ্যাসিড, ওমেগা থ্রী ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থেকে শুরু করে আঁশ জাতীয় ফাইবার এবং অন্যান্য আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। শরীরে যেই ধরনের অতিরিক্ত টক্সিন থাকে তা খুব সহজেই বের করে দিতে পারে।

চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ উপাদানগুলো কি

চিয়া সিড অত্যন্ত সুষম এবং স্বাস্থ্যকর একটি খাবার যাকে পুষ্টিগুণ উপাদানের একমাত্র পাওয়ার হাউস বলে ডাকা হয়। মূত্রাশয়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাকে দূরীভূত করে আপনাকে সুস্থ করে। এটি আপনার শরীরের প্রদাহ কমিয়ে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফ্যাটি এসিড এবং অন্যান্য প্রোটিনের উদ্ভিদ এর মত পুষ্টি দিতে পারে।

শুধু তাই নয় এই চিয়া বীজ আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগের হাত থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে। এই চিয়া সিড এর বিশেষ কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত দেখা যাক।

  • চিয়া সিডে যেই পরিমাণে প্রোটিন এবং আঁশ জাতীয় ফাইবার বর্তমান তা যথেষ্ট পুষ্টিগুণে ভরপুর।
  • রক্তে যেই পরিমাণে শর্করার উপস্থিতি প্রয়োজন সেটিকে স্থিতিশীল করার জন্যে এটি খুব ভালো কাজ করে থাকে।
  • শরীরের প্রতিটি হাড়কে শক্তিশালী করে তোলার জন্যে চিয়া সিড খেলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস সহ অন্যান্য পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।
  • এতে অধিক পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় কোষের অক্সিডেটিভ বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেস কমিয়ে দেয়।
  • ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্যে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ উপাদানের মধ্যে এর হাইড্রেশন ঠিক রাখে।
  • কার্বোহাইড্রেট এর মত পুষ্টিগুণ চিয়া সিড দেয় বলে আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।

চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম

চিয়া সিড এমন একটি খাবার যার কোন ধরনের গন্ধ বা স্বাদ পাওয়া যায় না। কোন রকম রান্না ছাড়াই আপনি চাইলে এটি খেতে পারবেন। প্রথমে আপনি চিয়া সিড খাওয়ার জন্যে পরিমাণ মতো নেওয়ার পর পানিতে খুব ভালোভাবে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভেজানোর পর এর মধ্যে যেকোন ধরনের জুস মিক্স করে নিতে পারেন।


রান্না করার পর সবজির উপরে কিছুটা ছড়িয়ে দিতে পারেন। অথবা টক দই খাওয়ার সময় আপনি এর উপরে চিয়া সিড হালকা করে ছড়িয়ে দিতে পারেন। অবশ্যই খাওয়ার পূর্বে হালকা গরম পানিতে আধা ঘন্টার মত ভিজিয়ে রাখবেন। চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে তা বুঝার জন্যে রাতে যখনই আপনি ঘুমাতে যাবেন এর পূর্বে চিয়া সিড খেয়ে নিবেন।

অথবা ঘুম থেকে উঠার পর সকালের দিকে সেই ভেজানো চিয়া সিড যেকোন জুস, পুডিং অথবা অন্য যেকোন ধরনের পানীয় খাদ্যের সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। চিয়া সিড শসা দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে এর সাথে টক দই নিয়ে যদি বিকেলের নাস্তা হিসেবে খান তাহলে খুবই মজাদার হতে পারে।

চিয়া সিড মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া কিভাবে কমায়

চিয়া সিড খেয়েও যে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া কমানো যায় সেই বিষয়ে আপনার কি কোন ধারণা আছে? অনেকেই দেখা যায় মূত্রাশয়ের বিভিন্ন যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন কোনভাবেই এর সমাধান করা যায় না। বিশেষ করে ঘরে থাকা চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে বিভিন্ন উপায়ে খেয়েও কিন্তু আপনি মূত্রাশয়ের যন্ত্রণা কমাতে পারেন। তবে এই যন্ত্রণা আপনি কিভাবে কমাতে পারেন সেই বিষয়ে চলুন দেখি।

  • প্রথমে আপনাকে কিছু চিয়া সিড সংগ্রহ করে নিতে হবে।
  • যদি সেটি আপনার বাড়িতে থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই পরিমাণ মতো চিয়া সিড সেখান থেকে নিয়ে নিবেন।
  • খুব ভালোভাবে তিন থেকে চার চামচের মতো চিয়া সিড নিয়ে নিবেন।
  • চিয়া সিড নেওয়ার পর আপনি নারকেলের পানি এর সাথে খুব ভালোভাবে মিক্স করে নিয়ে ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
  • আধা ঘন্টার মত যখন ভিজানো হয়ে যাবে তখন এটি আপনি খেয়ে নিতে পারেন।
  • এছাড়াও যদি আপনার কোন পছন্দের ফল থাকে, সেই ফল খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিয়ে জুস করে নিতে পারেন।
  • যখনই ফলের জুস অথবা রস নিয়ে নিবেন, এর সাথে আড়াই থেকে তিন চামচের মত চিয়া সিড মিক্স করে নিবেন। 
  • চিয়া সিড দিয়ে যখন এইরকম একটি সুপার ফুড আপনি তৈরি করে ফেলবেন তখন নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

মূত্রাশয়ে ব্যথা হলে কি চিয়া সিড খাবেন

প্রস্রাবের সময় যদি কোন কারণে আপনার মূত্রাশয়ের ব্যথা শুরু হয়ে যায়, তাহলে সেই সময়ে প্রাথমিকভাবে ব্যথা কমানোর জন্য আপনি চিয়া সিড খেতে পারেন। গোপনাঙ্গ থেকে যখন প্রস্রাব বের হয়ে যায়, তখন মূত্রাশয়ে ব্যথা অনুভব হলে আপনাকে বুঝতে হবে মূত্রনালীতে এক ধরনের সংক্রমণ হয়েছে। যার ফলে প্রস্রাব করতে যেয়ে আপনার মূত্রাশয়ে ব্যথা অনুভব হচ্ছে।

এই সমস্যাটি প্রায় অনেকের ক্ষেত্রেই হতে পারে। এই ব্যথা যখন উঠে তখন খুবই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনি মূত্রাশয়ের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ীভাবে কমিয়ে ফেলতে চান, তাহলে আপনাকে নিয়মিত চিয়া সিড খেতে হবে। কারণ চিয়া সিডে এমন কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে যা আপনার মূত্রাশয়ের ব্যথা খুব সহজেই দূরীভূত করে দিতে পারে।

চিয়া সিড এর স্বাস্থ্য উপকারিতা কোনগুলো

চিয়া সিড খেতে পারলে এর যথেষ্ট স্বাস্থ্য উপকারিতা আপনি পেতে পারেন। এটি আপনার শরীরে এমনভাবে শক্তি জোগায় যা আপনার দেহের কর্মক্ষমতা দ্বিগুণ করে দিতে পারে। অল্পতেই শরীরে কোন ধরনের ক্লান্তি ভাব আসবে না। তবে এর যেই সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সেই সম্পর্কে চলুন দেখে নিই।

  • চিয়া সিডে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি থাকে। 
  • কারণ এটি আপনার কোলন পরিষ্কার রাখতে সাহায্যে করে।
  • শরীরে যদি কোন ধরনের অ্যাসিডিটির মত সমস্যা থাকে তাহলে সেই সমস্যাকেও দূর করে।
  • নিয়মিত চিয়া সিড খেতে পারলে আপনার খুব ভালো ঘুম হবে।
  • শরীরে জয়েন্টের ব্যথা এবং দাঁতের গোড়ায় মাড়ির ব্যথা সহ অন্যান্য আরও অনেক ধরনের সমস্যা কমিয়ে দেয়।
  • পর্যাপ্ত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর ফলে চিয়া সিড আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের মতো যদি রোগ থাকে তাহলে রক্তে চিনির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্যে করে।
  • যদি কোন ধরনের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল আপনার শরীরে থাকে, তাহলে সেটির বিরুদ্ধেও লড়াই করতে পারে।
  • মলাশয়ের যেকোন ধরনের সমস্যা এমনকি ক্যান্সার হলেও সেটির ঝুঁকি কমায়।
  • প্রদাহজনিত সমস্যা এবং হজমে খুব ভালো কাজ করে।
  • খুব তাড়াতাড়ি আপনার ওজন কমিয়ে আপনাকে সাহায্যে করতে পারে।

প্রতিদিন চিয়া সিড খেলে কি উপকার হয়

নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়া স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার লক্ষণ। যদি আপনি করোনা ভাইরাসের সময়কার কথা চিন্তা করেন, তাহলে দেখতে পাবেন এই ভাইরাস আসার পর থেকে এখন মানুষের মধ্যে কতটা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে। প্রতিদিনের খাবারের রুটিনে আপনি চিয়া সিড রাখতে পারলে আপনার পুষ্টির চাহিদা অনেক বেশি পূরণ হবে।


শুধু তাই নয় আপনি যদি চিয়া সিড পানিতে ভিজিয়ে নিয়মিত খান, তাহলে দেখতে পাবেন আপনার পেট অল্পতেই ভরা থাকে। বারবার খাওয়ার যেই আগ্রহ থাকে, সেটি কমে যায়। যার ফলে ওজন খুব সহজেই কমে যেতে পারে। তাই বলে অতিরিক্ত চিয়া সিড অর্থাৎ চিয়া বীজ খাবেন না।

এতে করে আপনার হজমে সমস্যা করতে পারে। দেখতে খুবই ছোট হলে কি হবে এর কার্যকারিতা কিন্তু অনেক বেশি। যা শুধুমাত্র খাওয়ার মাধ্যমেই আপনি বুঝতে পারবেন। শরীরে থাকা যেকোন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণে এবং হৃদরোগের মতো সমস্যাকেও চিয়া সিড কমাতে পারে।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক, স্বাস্থ্য নিয়ে হেলাফেলা করা কখনোই ঠিক নয়। তাই চিয়া সিড কিভাবে মূত্রাশয়ের জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা দূর করে এই সম্পর্কে জেনে নিশ্চয়ই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে এখন সচেতন হতে পারবেন। এই অনুচ্ছেদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত পড়ার পর যদি আপনার কাছে মনে হয়। 

চিয়া সিড সম্পর্কিত বিষয়াবলি আপনার উপকারে এসেছে, তাহলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এর পাশাপাশি আপনার মূল্যবান মতামত জানাতে পোস্টের নিচে মন্তব্য করতে পারেন এবং আরো কিছু অজানা বিষয় পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আসতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url