আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় - অরজিনাল আজওয়া খেজুর

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে আপনি আজওয়া খেজুরের স্বাদ নাও পেতে পারেন। তাই এই খেজুরের ব্যাপক চাহিদা থাকায় আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় জেনে নিন। আমাদের আজকের পোস্ট থেকে আপনি আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় খুঁজে পাবেন।
আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়
আপনি যদি ভালো মানের আজওয়া খেজুর কিনতে চান তাহলে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন আজওয়া খেজুর লম্বা আকৃতির হয় না। এই খেজুরের বোটা অনেকটা গোলাপি হয়ে থাকে। যার মাথার দিকটা অনেকটা সোনালী রংয়ের হয়। তবে এই খেজুর খুবই কুচকুচে কালো হয়ে থাকে, যা স্বাভাবিক আকৃতির চেয়ে একটু বড় সাইজের হয়।

পেইজ সূচিপত্রঃ 

ভূমিকা

আসল আজওয়া খেজুর এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে বাজারের অন্যান্য খেজুরগুলো সম্পর্কেও ধারণা থাকতে হবে। কারণ সেই সকল খেজুরগুলো থেকে অরিজিনাল আজওয়া খেজুর সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে থাকে। এই ধরনের খেজুরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো খেজুরগুলো ভেতর থেকে খুবই নরম এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে।


অনেক বেশি কালো হয় বলে আসল আজওয়া খেজুরের গায়ে সাদা অথবা মাথায় সোনালী রঙের দাগ পাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের খেজুর এর মধ্যে আপনাকে আসল আজওয়া খেজুর নির্বাচন করতে হবে। যার ফলে আপনি খুব সহজেই বেছে নিতে পারবেন। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ আজওয়া খেজুর বিক্রি করতে পারে। তাই সব দিকে খুব ভালোভাবে লক্ষ্য রেখে আজওয়া খেজুর কেনার চেষ্টা করতে হবে।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার বিশেষ নিয়ম

যদি আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে আজওয়া খেজুর খাওয়ার জন্য বিশেষ নিয়মটি আয়ত্ত করতে পারেন। তাহলে আপনার শরীরের জন্য এটি খুবই উপকারী হবে। এমনকি ডায়াবেটিস অথবা কিডনি রোগীরাও এই আজওয়া খেজুর নিয়ম করে খেতে পারেন। তবে আপনি এই খেজুর যখনই খাবেন নিয়ম করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আজওয়া খেজুর খাওয়ার বিশেষ নিয়মগুলো কি সেই সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে আপনি দুইটি আজওয়া খেজুর ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
  • সকালে আপনি খালি পেটে সেই ভিজিয়ে রাখা পানি খেতে পারেন।
  • প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে যখনই আপনি সকালে খালি পেটে আজওয়া খেজুর খাবেন, তখন এটি আপনার শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি জোগায়।
  • মাঝে মাঝে আপনি মধু মিশিয়ে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন।
  • পাশাপাশি আপনি চাইলে মিল্ক সেক এর সাথে আজওয়া খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • এইভাবে যখনই আপনি নিয়ম করে আজওয়া খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করবেন, তখন শরীরে রক্তচাপের সমস্যা থাকলে সেটিও দূরীভূত হয়ে যাবে।
  • নিয়ম করে আজওয়া খেজুর খেলে আপনার বদহজম প্রতিরোধ হতে পারে।
  • বিশেষ নিয়ম করে রাতে আজওয়া খেজুর খেলে আপনি দীর্ঘ সময় সহবাস করতে পারবেন।
  • এই খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার সঙ্গীকে পরিপূর্ণ আনন্দ দিতে পারেন।
  • রাতে গরম দুধের সাথে আজওয়া খেজুর খেলে এটি খুব ভালো কাজ করতে পারে।
  • খেজুর যেহেতু একটি প্রাকৃতিক খাবার তাই নিয়ম করে প্রতিদিন নিয়মিত হালকা নাশতা হিসেবেও খেতে পারেন।
  • আপনার যদি ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকে, তাহলে ব্যায়াম করার আধা ঘন্টা পূর্বে আপনি আজওয়া খেজুর খেয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার শরীরে এনার্জি অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

অরজিনাল আজওয়া খেজুর কেন খাবেন

প্রতিদিন আজওয়া খেজুর খাওয়ার কারণে আপনি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে পারেন। এছাড়াও এই আজওয়া খেজুর সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের হাদিস রয়েছে। এই সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেই ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি করে আজওয়া খেজুর খেতে পারবে।


সেইদিন কোন বিষ বা যাদু তার কোন ধরনের ক্ষতি করতে পারবে না। আপনি যদি প্রতিদিন এই আজওয়া খেজুর খেতে পারেন, তাহলে আপনার ত্বক ও চোখের বিভিন্ন রোগ খুব সহজেই দূর হয়ে যেতে পারে। কারো যদি স্মৃতিশক্তি ভ্রম হয়ে যায় তাহলে এই আজওয়া খেজুর খেতে পারেন, তাহলে ধীরে ধীরে তার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসতে পারে।

শরীরকে ঠিক রাখতে আজওয়া খেজুর এর অবদান রয়েছে। আজওয়া খেজুর এর মধ্যে যেই পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান রয়েছে, তা আপনার শরীরে পর্যাপ্ত শক্তির জোগান দিতে পারে। এছাড়াও ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অন্যান্য সকল ধরনের ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে পারে।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

যদি আপনি নিয়মিত খেজুর খেয়ে নিজের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে চান, তাহলে নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেতে পারেন। এই আজওয়া খেজুর আপনার শরীরের পুষ্টির চাহিদা অনেক বেশি পূরণ করে থাকে। অনেকেই দেখা যায়, এই আজওয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে খুব বেশি একটা জানে না। অনেকে খেজুর খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু এই আজওয়া খেজুর আপনার শরীরে অনেক ধরনের উপকার সাধন করে থাকে যার মধ্যে -

  • আজওয়া খেজুর আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পেতে সাহায্য করে থাকে।
  • আপনার শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় ওজন বেড়ে গেলে সেই ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে এই আজওয়া খেজুর অত্যন্ত ভূমিকা রাখে।
  • এমনকি আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যা থাকে, তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতেও এর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
  • শরীরে যদি পর্যাপ্ত রক্তশূন্যতার অভাব থাকে, তাহলে আপনি প্রচুর পরিমাণে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন। যার ফলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন এবং মিনারেল প্রবেশ করবে।
  • আপনার দেহকে ক্লান্তিমুক্ত করতে আজওয়া খেজুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখে।
  • আপনার হৃদরোগের মত সমস্যা থাকলেও আজওয়া খেজুর খাওয়ার ফলে সেটি দূর হয়ে যায়।
  • যদি চোখে দৃষ্টিশক্তি এর সমস্যা থাকে, তাহলে এই আজওয়া খেজুর খেয়ে শরীরে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে পারেন।
  • পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন, যা আপনার পাকস্থলীর সব ধরনের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • যদি আপনার ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য এর মত সমস্যা থাকে, তাহলে আজওয়া খেজুর খেয়ে নিজেকে সুস্থ করতে পারেন।
  • আপনার শরীরে পেশির গঠন মজবুত করার জন্য এই আজওয়া খেজুর বিশেষ প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • যদি আপনি যৌন ক্ষমতা বাড়াতে চান, তাহলে আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় জানুন। যদি নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেতে পারেন, তাহলে শুক্রাণু পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • ক্যালসিয়াম ও হাড়ের গঠন নিশ্চিত করার জন্য আপনি আজওয়া খেজুর খেতে পারেন, কারণ এটি ক্ষয় রোধ করতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এই আজওয়া খেজুর আপনার লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় এই আজওয়া খেজুর খুবই চাহিদা যুক্ত হয়ে থাকে। তাই আপনার শরীরে সুস্থতার কথা চিন্তা করে নিয়মিত আজওয়া খেজুর খেতে পারেন।

আজওয়া খেজুরের দাম কত। আজওয়া খেজুরের মূল্য

যদি আপনি এই আজওয়া খেজুরের দাম সম্পর্কে সঠিক একটি ধারণা নিতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে আমদানি কারক এবং সংগ্রহের স্থান সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। কারণ আমদানিকারক এবং সংগ্রহের স্থান এর উপর ভিত্তি করে আজওয়া খেজুরের দাম উঠানামা করতে পারে।

সেইক্ষেত্রে এক কেজি আজওয়া খেজুর এর মূল্য আটশো পঞ্চাশ টাকা থেকে তিন হাজার অথবা এর উপরেও হতে পারে। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই এর অরিজিনাল দাম সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। যেন এই খেজুর কিনতে আপনার কোন ধরনের সমস্যা না হয়।

কারণ জায়গা ভেদে আজওয়া খেজুরের দাম কম বেশি হতে পারে। এইক্ষেত্রে আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনি আজওয়া খেজুর কিনতে পারেন।

আসল আজওয়া খেজুর কিনতে করণীয়

আজওয়া খেজুর কিনতে যেয়ে আপনি অন্য কোন খেজুর কিনে ফেলতে পারেন। তাই এই খেজুর কেনার সময় আপনার কিছু করণীয় রয়েছে। যার মধ্যে আপনাকে সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে, আজওয়া খেজুর অন্য যেকোন ধরনের খেজুরগুলো থেকে একটু দামী হয়ে থাকে।

এই খেজুর দেখতে অনেকটা মাঝারি আকৃতির ও কুচকুচে কালো হয়ে থাকে। যদিও মদিনায় এই খেজুরের উৎপত্তি। আপনি যদি আসল আজওয়া খেজুর কিনতে চান তাহলে যেই সকল বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো -

  • আজওয়া খেজুর কেনার সময় আপনাকে দেখতে হবে ভেতর থেকে খেজুরটা যথেষ্ট নরম কিনা।
  • অথবা এই খেজুরের চামড়ার উপরের দিকে সাদা কোন ধরনের দাগ রয়েছে কিনা তা বুঝতে হবে।
  • আজওয়া খেজুর অন্যান্য খেজুর থেকে একটু আলাদা হয়ে বলে এই খেজুরের বোটা গোলাপি হতে পারে।
  • এই খেজুর কখনোই খাটো এবং লম্বা আকৃতির হয় না।
  • যেহেতু অনেকটা গোলাকার আকৃতির হয়ে থাকে, তাই আপনার চেনার ক্ষেত্রে একটু সহজ হতে পারে।
  • বিশেষ করে একটু চকচকে কালো হলে সেই খেজুরগুলো কিনতে পারেন।

শেষকথা

প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আপনারা সবাই আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় সম্পর্কে খুব ভালোভাবে বিস্তারিত জানতে পারলেন। আপনি এই পোস্টটি পড়ে আজওয়া খেজুর খাওয়ার বিশেষ নিয়ম, আজওয়া খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, আসল আজওয়া খেজুর কেন খাবেন এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে পারেন।
 

এছাড়াও নিয়মিত আজওয়া খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। যদি আপনার কাছে আজকের অনুচ্ছেদটি পড়ে ভালো লাগে এবং উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার আশেপাশের সকল বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। আপনার মূল্যবান মতামত জানাতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করতে পারেন। পাশাপাশি অনেক ধরনের অজানা পোস্ট পেতে ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url