ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে

ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে তা কিভাবে বুঝবেন। ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে সেটি আপনার খাদ্যাভাসে কিছুটা পরিবর্তন আনলে খুব ভালো করেই বুঝতে পারবেন। ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে এটি জানার জন্যে যদি পোস্টটি পড়তে আসেন তাহলে আপনাকে স্বাগতম।
ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে
প্রতিনিয়ত ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্লাটিলেটের স্বাভাবিক মাত্রা হারিয়ে যাচ্ছে। অস্বাভাবিক মাত্রায় প্লাটিলেট যখন কমে যায় তখন ডালিম আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে ডালিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ যখন শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় তখন তা পূরণের জন্য ডালিম খুবই উপকারী।

পেইজ সূচিপত্র

ভূমিকা

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডালিম এমন একটি পুষ্টিকর ফল যা আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য দরকারী। ডালিম ফলের দাম একটু বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই খেতে আগ্রহী হয় না। কিন্তু এর যেই পরিমাণে বহুল উপকার রয়েছে তা চিন্তাও করা যায় না। পুষ্টিগুণ উপাদানে ভরপুর এই ডালিম আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করে।


আপনার শরীরে কোলেস্টেরল এর ঝুঁকি কমিয়ে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। হিমোগ্লোবিন বাড়াতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ডালিম অনেক বেশি সাহায্য করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে শরীরকে খুব ভালোভাবে সুস্থ রাখতে পারে। ডায়াবেটিসের জন্যে ইনসুলিনের বিকল্প হিসেবেও কাজ করতে পারে।

ডালিম খাওয়ার নিয়ম গুলো কি

ডালিম খাওয়ার এক রকমের নিয়ম রয়েছে। যদি আপনি সেই নিয়মে ডালিম খেতে পারেন, তাহলে আপনার অনেক ধরনের রোগেরও উপকার হতে পারে। বিশেষ করে যা আপনার ওষুধ খেয়েও নিরাময় করা কঠিন লাগছে। এখনকার সময়ে অনেক বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। সেইক্ষেত্রেও রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে ডালিম খেতে পারেন। 

  • প্রথমে একটি ডালিম ফল নিয়ে এর খোসা ভালো করে ছাড়িয়ে নিতে হবে।
  • ডালিমের খোসা ভালো করে গুঁড়ো করে রাখতে পারেন।
  • যদি আপনি নিয়মিত ডালিম ফলের গুঁড়ো আড়াই থেকে তিন গ্রামের মতো খেতে পারেন।
  • তাহলে আপনার ডায়রিয়া এর মতো সমস্যাও বন্ধ হয়ে যাবে।
  • সকাল ও সন্ধ্যায় আপনি এই তাজা ফলের খোসার গুঁড়ো দিয়ে পানি পান করতে পারেন।
  • অথবা আপনি চাইলে ডালিম এর খোসার গুঁড়োর সাথে জায়ফল এর গুঁড়ো মিক্স করে নিতে পারেন।
  • এর সাথে চাইলে জাফরান মিক্স করেও ডালিমের খোসার গুঁড়োর সাথে নিতে পারেন।

ডালিম খেলে কি রক্ত বাড়ে

আপনি কি জানেন? নিয়মিত ডালিম খেতে পারলে এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অনেক ভালোভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে। প্রয়োজনীয় অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন অংশে প্রবেশ করতে পারে। রক্তের মাঝে যেই ধরনের লোহিত রক্তকণিকা রয়েছে, ডালিম তার ঘনত্ব ঠিক রাখতে অনেক ভালোভাবে সাহায্য করতে পারে।


আর এই ধরনের ঘনত্ব বাড়ায় বলে রক্তে হিমোগ্লোবিন ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। যার ফলে রক্ত ঘন ও লাল হয়। যখন শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন অংশে পৌঁছে যায়, তখন বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকেও আপনি রক্ষা পেতে পারেন। ডালিম অনেক দ্রুত আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর কাজ করে থাকে।

খালি পেটে ডালিম খাওয়ার উপকারিতা

ডালিম খেলে যেই ধরনের উপকার হয় তা সম্পর্কে অনেকেরই  কম বেশি একটি ধারণা থাকতে পারে। লাল টসটসে দানায় পরিপূর্ণ এই রসালো ফল খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। খুব বেশি সস্তা না হলেও কষ্ট করে হলেও এই ফল যদি নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন। ডালিম খেলে যেই সকল উপকার হয় তার বিস্তারিত বিষয়গুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আসুন জেনে নেয়া যাক।

  • বাচ্চাদের খাবারের তালিকায় আপনি নিয়মিত ডালিম ফল রাখতে পারেন।
  • যেহেতু এটি অনেক বেশি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে, তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা এটি একটু বেশি করে খেতে পারেন।
  • হাড়ের বিভিন্ন ধরনের জয়েন্টে অথবা আর্থ্রাইটিস এর সমস্যা রয়েছে। এই রকম ব্যক্তিরা ডালিম খাওয়ার ফলে সমস্যা দূর করতে পারেন।
  • ডালিম রক্তে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন বাড়ায় বলে অ্যানিমিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের রক্তের রোগের সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ব্যবহারে খুব বেশি উপকার পাবেন।
  • শরীরে উৎপন্ন রোগের ব্যাকটেরিয়া এর সাথে লড়াই করতে ডালিম সাহায্যে করতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডালিম খেতে পারেন, খুব কম সময়ের মধ্যেই আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
  • এমনকি যদি হঠাৎ করে আপনার নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু করে দেয়, তাহলে আপনি ডালিমের ফুল রস করে নিয়ে নাকে শ্বাসের মাধ্যমে নিতে পারেন। তাহলে রক্ত পড়া ধীরে ধীরে বন্ধ হতে পারে।
  • ডায়রিয়া, আমাশয়ের মত সমস্যা খুব সহজেই ডালিম এর খোসা সিদ্ধ করে খাওয়ার ফলে দূর হয়ে যায়।
  • গর্ভপাত দূর করতে ডালিম গাছের পাতা একাধিক বার মধু ও দই এর সাথে মিক্স করে খেতে পারলে এটি বন্ধ করা যায়।
  • যদি পেটে পর্যাপ্ত কৃমি হয় তাহলে ডালিম গাছের শিকড় খুব ভালো কাজ করে।

রক্তে প্লাটিলেট কমে গেলে কি ডালিম খাওয়া উচিত

প্লাটিলেট কমে যাওয়ার ঘটনা অনেক বেশি ঘটে থাকে। তাই প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য আপনাকে ডালিম খেতে হবে। বিশেষ করে যারা ডেঙ্গু রোগী রয়েছেন তাদের জন্য ডালিম অত্যাবশ্যকীয়। প্লাটিলেটের সংখ্যা যদি কমে আসতে থাকে, তাহলে রোগী খুব দ্রুত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে থাকে। 

অনেক সময় এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। তাই ডালিমে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে আয়রনের উপাদান রয়েছে, তাই এটি অন্যান্য যেকোন ফল থেকে রোগ নিরাময়ের জন্য খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারে। আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে রক্তের ঘনত্ব ঠিক রাখতে পারে।

যার ফলে প্লাটিলেট খুব সহজেই বেড়ে যায়। যখন শরীরের প্রতিটি জায়গায় রক্তের মাধ্যমে টসটসে এই ডালিমের রসে থাকা উপাদান পৌঁছে যায়, তখন আপনার রক্তের দুর্বলতা খুব সহজেই দূর হয়ে যায়। নিজের প্রতিদিনের দৈহিক কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত ডালিম খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ডালিমে কি ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে

ডালিম নামক ফলটিতে অন্যান্য ফলের থেকেও অনেক বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি শক্তিশালী ফল যা খুব সহজেই আপনার শরীরে পুষ্টি জোগাতে পারে। পুষ্টি উপাদানের বিস্তারিত বিষয়গুলো যেমন,

  • ডালিমের দানায় আপনি প্রায় ছত্রিশ শতাংশ এর মত ভিটামিন কে পাবেন।
  • আনারসের চেয়েও প্রায় সাতগুণ বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ ডালিমে রয়েছে। 
  • এতে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি রয়েছে যার প্রায় ত্রিশ শতাংশই বিদ্যমান।
  • কমলা, আপেল অথবা অন্য যেকোন ধরনের ফলের প্রায় চার গুণ উপাদান ডালিমে বিদ্যমান।
  • ভিটামিন বি ষোল শতাংশ এবং পটাশিয়াম বারো শতাংশ এর মত উপাদান রয়েছে।
  • এই পুষ্টি উপাদানের চাহিদা গুলো আপনার দেহের ঘাটতি পূরণের জন্যে নিয়মিত ডালিম খেতে হবে।

ডালিমকে কেন মহৌষধি হিসেবে অভিহিত করা হয়

ডালিম ফল এমন এক ধরনের মহাঔষধ যা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের সাথে লড়াই করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে শুরু করে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, হাড়ের ব্যথা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ানো সহ আরও কিছু রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে পারে। নিয়মিত ডালিম খাওয়ার ফলে রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং প্লাটিলেট বেড়ে যায়।


যা একজন ডেঙ্গু রোগীর জন্য খুবই দরকারী একটি ফল। যেহেতু এই ডালিম ফল আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। তাই নিয়মিত অল্প করে ডালিম খেতে পারেন। আপনার শরীরের অতিরিক্ত ক্লান্তি, ঘা, পুঁজ এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া সহ আরও অনেক ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে।

শেষের মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগণ, আজকের আর্টিকেলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেটের ঘাটতি পূরণ করে বিস্তারিত পড়ে তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। বিস্তারিত ভালো লেগে থাকলে আশেপাশের বন্ধুদের শেয়ার করতে পারেন এবং মূল্যবান মতামত দিতে পোস্টের নিচে কমেন্টস করতে পারেন। আরো কিছু অজানা বিষয়ে জানতে ওয়েবসাইট ভিজিট করে আসতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url