জাফরান খাওয়ার নিয়ম

জাফরান এক প্রকার মসলা জাতীয় খাবার যাকে আমরা জাফরান ক্রোকাস নামে চিনি। জাফরান মসলা মূলত ফল সংগ্রহ এবং শুকানোর পর তৈরি হয়। খাবারে অনন্য স্বাদ আনতে এবং খাবারের রং পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাধারণত জাফরান মসলা বেশ আলোচিত। আপনি যদি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলাগুলোর দিকে দেখেন সেখানে কিন্তু জাফরানের নাম প্রথমে আসে। জাফরান এতটাই দামি এবং অতি উন্নত মানের মসলা। আজকের পোস্টে আমরা জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেও জানবো।

জাফরানের উৎপত্তি কোথা থেকে হয় সে বিষয়ে কিন্তু এখনো দ্বিমত আছে এবং সঠিকভাবে জানা যায়নি জাফরানের উৎপত্তিস্থল। তারপরেও গবেষকদের ধারণার শেষ নেই। ধারণা করা হয় ইরান থেকে জাফরানের উৎপত্তি। জাফরানের মধ্যে থাকে কেরোটিনয়েড যার অঙ্গের পরিবর্তন করতে পারে। তাহলে আমরা জানলাম জাফরান কি। চলুন তাহলে আমরা এখন জেনে নেই জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

শরীরের জন্য অতি উপকারী জাফরান সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানতে হবে। কারণ জাফরান মানব দেহের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পাদন করে। জাফরানের মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ফ্লামেটরি উপাদান গুলো আছে সেগুলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য উপাদানগুলো বেশ কার্যকর।

জাফরান খাবারের স্বাদ পরিবর্তনে অনন্য এবং আমাদের দেহের জন্য বেশ উপকারী মসলা। বর্তমান সময়ে দামি মসলাগুলোর মধ্যে জাফরান অন্যতম। জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের সবাইকে জানতে হবে। চলুন তাহলে জাফরান খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নেই। জাফরান খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো রাত।

রাতে ঘুমাতে যাবেন কিন্তু তার আগে শরীরের জন্য একটি উপকারী কাজ করতে পারেন তাহলো দুধের সাথে জাফরান মিশ্রিত করে পান করতে পারেন। এর জন্য কিছু উপাদান লাগবে যেমন খাঁটি দুধ এক কাপ, এক চামচ মধু, এক চিমটি জাফরান এবং কিছু কিসমিস একত্রে মিশ্রিত করে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

মাঝে মাঝে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে গর্ভাবস্থায় কি জাফরান খাওয়া যায়। তো এর উত্তর হলো হ্যাঁ, যদি সঠিক পরিমানে খায় তাহলে কোন সমস্যা নেই। গর্ভাবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা আছে সেটা হল খাবার। স্বাভাবিকের তুলনায় গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের পরিমাণ অনেক বেশি লাগে এবং সেটা হতে হয় পুষ্টিকর। গর্ভাবস্থায় খাবার সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় জাফরান পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে তবে নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় যে কোন খাবার খেতে হলে সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়। নয়তো গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। জাফরান যেহেতু শরীরের জন্য উপকারী এবং কিছু কিছু অপকারিতা আছে সেজন্য জাফরান খাওয়ার নিয়ম হিসেবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। জাফরান কখন খাওয়া যাবে সে বিষয়ে ডাক্তাররা ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন। ডাক্তারের পরামর্শে যখন খাওয়া শুরু করুন। জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অবগত হন।

জাফরান অতি মূল্যবান একটি মসলা জাতীয় খাদ্য। জাফরান আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে বেশ উপকারী। জাফরান খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলকেই জানতে হবে-

• জাফরান খেলে পেটের সমস্যা ভালো হয়ে যায় অর্থাৎ হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
• মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশন কমাতে জাফরান বেশ উপকারী।
• অনেক সময় আমরা অতিরিক্ত জ্বরে ভুগে থাকি। এ সময় জাফরান খাওয়া যায় কারণ জাফরানের মধ্যে ক্রসিং নামক পদার্থ জ্বর কমায়।
• অনেকেরই ঘুমের সমস্যা থাকে ঘুম আসে না। তো এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দুধের সঙ্গে জাফরান মিশিয়ে খান।
• পিরিয়ডের ব্যথা দূর করতে জাফরান দুর্দান্ত কাজ করে।
• জাফরান খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
• জাফরানের মধ্যে এন্ট্রি ফ্লামেটরি থাকার কারণে বাথ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
• জাফরানের মধ্যে পটাশিয়াম পাওয়া যায় যা ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
• জাফরান খাওয়ার ফলে অ্যাজমা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

প্রিয় পাঠক, আশা করি আপনারা জাফরান খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।এছাড়া আরো বিস্তারিত বিষয় সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি সেগুলো বুঝতে পেরেছেন। তারপরও যদি কোন কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এছাড়া স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের টিপস সম্পর্কে জানতে অর্ডিনারি আইটির ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ। জব আইডি ২৫৫৯১.