মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম রয়েছে। আমরা যারা নিয়মিত রূপচর্চা করে থাকি সাধারণত তাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো মসুর ডাল। কিন্তু অনেকেই মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে তেমনভাবে কোন ধারণা রাখেনা। আজকের এই আর্টিকেলে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম
- মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম
- মসুর ডাল দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
- মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক
- তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে মসুর ডাল
- শেষ কথা
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম
আমরা সাধারণত রূপচর্চার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে থাকি। সাধারণত হাতের কাছে যে সহজ উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মসুর ডাল। আপনি যদি রূপচর্চা করতে চান তাহলে খুব সহজেই মসুর ডাল দিয়ে করতে পারবেন। সাধারণত এটি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে এবং আপনার ত্বককে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ মসুর ডালের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়মঃ
১। মসুর ডাল ব্যবহার করার জন্য প্রথমে আপনাকে রাতে দুধের সঙ্গে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপরে সকাল বেলায় ডাল গুলোকে পিষে ভালোভাবে মুখে লাগাতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন এই উপাদানটি আপনার মুখে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চেহারার কালো দাগ দূর করতে এবং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
২। যদি কোন কারণে আপনার মুখে দাগ হয়ে যায় তাহলে সেই দাগ দূর করার জন্য মসুর ডাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাধারণত আপনাকে ভালোভাবে মসুর ডাল মিশিয়ে নিতে হবে এরপরে চন্দনের গোড়া এবং মুলতানি মাটি এর সাথে কমলালেবুর শুকনো খোসা পেস্ট করে এর মধ্যে দিতে হবে এরপরে এই উপাদান গুলো মুখে এবং শরীরে বিভিন্ন জায়গায় লাগাতে হবে।
৩। মসুর ডাল রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করার আরো একটি নিয়ম হলো মসুর ডাল ভালোভাবে গুঁড়ো করে নিতে হবে এরপরে ডিমের হলুদ অংশটা ভালোভাবে এর সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর মুখে লাগিয়ে ভালোভাবে শুকাতে হবে। বিশেষ করে প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে এর উপাদানটি মাখলে আপনার ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
৪। আমরা সাধারণত মুখের উজ্জ্বলতার বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ ব্যবহার করি। আপনি যদি চান তাহলে প্রাকৃতিক উপায়ে ফ্রেশ তৈরি করে আপনার মুখে ব্যবহার করতে পারবেন। সাধারণত এটি তৈরি করার জন্য আপনাকে প্রথমে এক চামচ মসুর ডাল বেটে নিতে হবে এরপরে দুই চামচ দুধ এবং পরিমাপমতো হলুদ এর সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
মসুর ডাল দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে আমরা জেনেছি। আমরা সকলেই চাই আমাদের ত্বক উজ্জ্বল থাকুক এবং ফর্সা থাকুক। কারণ মানুষ ফর্সা জিনিস ভালোবাসে। প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের ত্বকের রূপচর্চার জন্য মসুর ডাল ব্যবহারিত হয়ে আসছে। বর্তমান সময়ের বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক তৈরি হয়ে যাওয়াই এর ব্যবহার অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাহলে চলুন মসুর ডাল দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
মসুর ডালের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান সাধারণত তাই এটি আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মনে করা হয়। এতে রয়েছে ফাইবার এবং প্রোটিন সাধারণত এটি ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের বলিরেখা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকের জন্য মসুর ডাল অনেক বেশি উপকারী।
আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত পরিমাণে সুস্থ হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই ত্বকে মসুর ডাল ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে মসুর ডাল কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে এরপরে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। বাটা মসুর ডালের সাথে এক চামচ দুধ এবং এক চামচ অলিভ অয়েল মেশিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে।
যাদের ত্বকের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে দাগ থাকে সাধারণত তাদের ত্বকের কালার এমনিতেই কালো লাগে। তাই আপনি যদি ত্বকের রং ফর্সা করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে আপনার ত্বক থেকে এই দাগগুলো তুলে ফেলতে হবে। সাধারণত এই দাগগুলো তোলার জন্য আপনাকে মসুর ডাল বাটার সাথে মধু এবং লেবু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।
মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক
আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে মসুর ডাল হলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমরা যদি মসুর ডাল ব্যবহার করতে পারি তাহলে এটি আমাদের চুলের জন্য ও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রতিটি উপকারী উপাদানের বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে ঠিক তেমন মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ পেয়ারা পাতার ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
মসুর ডালের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস সাধারণত এটি আমাদের রক্তে ফরাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনি যদি খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী এবং পরিমাপ অনুযায়ী খেতে হবে। আর যদি এটি আপনার ত্বকের ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
উপাদানটি যতই উপকারী হোক না কেন অতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে এটি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা করতে পারে। তাই সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন অথবা এর থেকেও কম দিন মসুর ডাল আমাদের ত্বকের ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু মসুর ডাল ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম রয়েছে তাই অবশ্যই নিয়মগুলো মেনে তারপরে ব্যবহার করতে হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে মসুর ডাল
আমাদের ত্বক যদি অতিরিক্ত পরিমাণে তৈলাক্ত হয়ে থাকে তাহলে এই ত্বকে ব্রণ বেশি বের হয়। কারণ ত্বক তৈলাক্ত হওয়ার কারণে একটুতেই ধুলোবালি ত্বকের মধ্যে লেগে যায় যার ফলে লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায় সাধারণত এর কারণে ওই স্থান দিয়ে ব্রণ উঠে যায়। এখন আপনি যদি তৈলাক দূর করতে চান তাহলে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত জানতে হবে।
আপনি বাড়িতে বসেই বিভিন্ন ধরনের উপাদান তৈরি করে নিজেকে তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্ত করতে পারবেন। বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এই উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মসুর ডাল। আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মধুর ডাল।
আমাদের ত্বকের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে মসুর ডাল। এখন আপনি যদি আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে মসুর ডাল ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। এরপরে মসুর ডাল বাটার সাথে আপনাকে সামান্য পরিমাণে গোলাপ জল, বাদামের তেল ও লেবু ভালোভাবে দিতে হবে। যদি পারেন তাহলে মধু ব্যবহার করুন।
এছাড়া এলোভেরা জেল আমাদের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই উপাদানের সাথে আপনি সহপরিমাণ অ্যালোভেরা জেল যুক্ত করতে পারেন। এই উপাদান গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে সুন্দর করে পেস্ট তৈরি করে আপনার ত্বকের ব্যবহার করুন। এরপরে রাতে ঘুমিয়ে যান সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়মঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম, মসুর ডাল দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়, মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে মসুর ডাল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু এই বিষয়টি আমাদের রূপচর্চার সাথে জড়িত তাই অবশ্যই আমাদেরকে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। বিশেষ করে আমাদের ত্বকের ব্যবহার করার আগে অবশ্যই কিভাবে ব্যবহার করতে হবে এই বিষয়গুলো জেনে নেওয়া জরুরী।
আরো পড়ুনঃ আপেল খালি পেটে খেলে কি হয়
এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। আপনি নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল করতে পারবেন কারণ আমরা নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২৫৪২৭
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url